অতীতের মতোই প্রশাসনে পদায়ন-পদোন্নতিতে পছন্দের ছাপ দেখা যাচ্ছে। এতে প্রশাসনের শীর্ষপদ সচিবসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে পদোন্নতি বা বদলির আদেশ পেয়েও মন্ত্রণালয়ে যোগ দিতে না পারার ঘটনা ঘটেছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ আব্দুর রহমান তরফদার। তাকে অতিরিক্ত সচিব থেকে পদোন্নতি দিয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে সচিব হিসেবে পদায়নের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে গত ২৮ আগস্ট। গতকাল ৭ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ে সচিব পদে যোগদানের খবর মেলেনি। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটেও সচিবের ঘর ফাঁকা দেখা গেছে।এর আগে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এসএম শাকিল আখতার যোগ দিতে পারেননি। সে সময় অতিরিক্ত সচিব তোফাজ্জেল হোসেনকে সচিব করার ব্যাপারে উপদেষ্টার ডিও লেটার ছিল। বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা হওয়ায় প্রক্রিয়াটি থেমে যায়। এর অনেক পরে বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা আবু তাহের মোহাম্মদ জাবের সচিব হিসেবে পদোন্নতি পান। তিনি অবশ্য যোগ দিতে পেরেছেন মৎস্য মন্ত্রণালয়ে।
তথ্যমতে, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ও ১৫ ব্যাচের কর্মকর্তা আব্দুর রহমান তরফদার সচিব হিসেবে পদোন্নতি পেলেও গতকাল পর্যন্ত শ্রম মন্ত্রণালয়ে সচিবের পদ ফাঁকা থেকে গেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আনোয়ার হোসেনকে সেখানে বদলির চিন্তা চলছে বলে একটি সূত্র জানিয়েছে। ১৯ আগস্ট তিনি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ে যোগ দেন। তার আগে সেখানে দায়িত্ব পালন করেন সিনিয়র সচিব মোকাব্বির হোসেন। পরে তাকে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে বদলি করা হয়।সূত্রগুলো বলছে, ব্যক্তিগত পছন্দ থেকে বেরিয়ে এসে শীর্ষ ও গুরুত্বপূর্ণ পদে দক্ষ ও যোগ্য ব্যক্তির পদায়ন দরকার। কোনো মন্ত্রণালয়ে দীর্ঘদিন সচিব না থাকলে প্রশাসনের কার্যক্রমে স্থবিরতা দেখা দেয়। পলাতক শেখ হাসিনা সরকারের আমলের মতোই পদায়ন নিয়ে রেষারেষি অব্যাহত। এ জন্য দরকার জনপ্রশাসনকে ঢেলে সাজানোর জন্য দূরদর্শিতা ও সঠিক কর্মপরিকল্পনা।
যদিও এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোখলেস উর রহমানের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।এদিকে সমন্বয়হীনতার কারণে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগে সচিব পদায়ন প্রক্রিয়া থমকে আছে। এতে মন্ত্রণালয়ে দাপ্তরিক কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। আবার প্রভাবশালী আমলাদের ব্যক্তি সখ্যতার সুবাদে সচিব পদায়নের অভিযোগ আসে। কিছু ক্ষেত্রে পছন্দের কর্মকর্তা না হওয়ায় সেই কর্মকর্তার যোগদানে আপত্তি জানান সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা। এমন ঘটনায় প্রশাসনে নেতিবাচক প্রভাব বিরাজ করছে।