NEWSTV24
করোনার উচ্চ ঝুঁকিতে চার রোগে আক্রান্তরা
মঙ্গলবার, ১৫ জুলাই ২০২৫ ১৬:১৪ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

চট্টগ্রামে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতদের মধ্যে ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও কিডনি রোগীর সংখ্যা বেশি। গত এক মাসে প্রায় ২০০ জনের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে আটজনের। মৃতদের মধ্যে সাতজন ও আক্রান্তদের মধ্যে শতাধিক এই চার রোগে ভুগছিলেন। চট্টগ্রামের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে এ পর্যন্ত ভর্তি রোগীর তথ্য বিশ্লেষণ করে এমন চিত্র উঠে এসেছে।করোনার এবারের ওমিক্রন এক্স বিবি ধরনটি অতীতে শনাক্ত হওয়া অন্যসব ধরনের চেয়ে কয়েক গুণ শক্তিশালী। স্বল্প সময়ের মধ্যে চট্টগ্রামে অনেকের আক্রান্ত হওয়া ও মৃত্যুর মাধ্যমে এর প্রমাণ মিলেছে। ডায়াবেটিস, হৃদরোগ, ক্যান্সার ও কিডনি সমস্যায় ভোগা রোগীরা নতুন ধরনে আক্রান্তের উচ্চ ঝুঁকিতে বেশি থাকার কথা বলছেন চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্টরা।চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার বাসিন্দা ৪০ বছর বয়সী সালেহা বেগম। কয়েক বছর ধরে তিনি ডায়াবেটিস ও হৃদরোগে ভুগছিলেন। এর মধ্যে তাঁর শরীরে দেখা যায় করোনার উপসর্গ। এক পর্যায়ে পরীক্ষায় পজিটিভ শনাক্ত হয়। শারীরিক অবস্থা ক্রমে অবনতি হওয়ায় তাঁকে ভর্তি করতে হয় হাসপাতালে। চট্টগ্রামের করোনা ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতালে ভর্তির দু দিনের মাথায় মৃত্যু হয় তাঁর।সালেহা বেগমের মতো দীর্ঘদিন ধরে হৃদরোগ ও কিডনি রোগে ভুগছিলেন পটিয়ার বাসিন্দা ১৪ বছর বয়সী মো. এরশাদ। কিছুদিন ধরে তাঁর প্রচণ্ড শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। চিকিৎসক দেখানোর পর পরীক্ষায় করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়। দ্রুত শারীরিক অবস্থা খারাপ হওয়ায় তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তির কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হলে নেওয়া হয় আইসিইউতে। বাঁচতে পারেননি তিনি।

আগে থেকে ডায়াবেটিস ও নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন ৫০ বছর বয়সী জয়নাল আবেদীন। এরই মধ্যে করোনা আক্রান্ত হলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। চিকিৎসায় তাঁর শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়নি। তিন দিনের মাথায় গত ১২ জুলাই মৃত্যু হয় তাঁর। তিনি চন্দনাইশ এলাকার বাসিন্দা।চট্টগ্রামের সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন বলেন, কভিডের এবারের নতুন ধরনটি আগের ডেল্টাসহ অন্য ভ্যারিয়েন্টের চেয়ে পাঁচ গুণ শক্তিশালী। কম সময়ের মধ্যে অনেকের শরীরে ভাইরাসটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। নতুন ভ্যারিয়েন্টের প্রভাবে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ জন্য প্রতিরোধই সবচেয়ে ভালো পথ। মাস্ক ব্যবহার, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা এবং হালকা উপসর্গ দেখা দিলে দ্রুত পরীক্ষা করাতে হবে।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তসলিম উদ্দীন বলেন, নানা রোগে আক্রান্তদের শরীরে করোনার উপসর্গ বেশি দেখা যাচ্ছে। নানা জটিল রোগে ভোগাদের ব্যাপারে পরিবারগুলোকে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।চট্টগ্রামের করোনা ডেডিকেটেড জেনারেল হাসপাতালের মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. হামিদুল্লাহ মেহেদী বলেন, আগে থেকে নানা রোগে ভোগা রোগীদের শরীরে করোনাভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। মারা যাওয়াদের বেশির ভাগ আগে থেকে কয়েকটি রোগে আক্রান্ত ছিলেন। এমন কয়েকজনকে আইসিইউতে ভর্তির পরও বাঁচানো যায়নি। আক্রান্ত অনেকে অবহেলা করে দেরিতে চিকিৎসা নিচ্ছেন। করোনার এ সময়ে ইচ্ছামতো ফার্মেসি থেকে ওষুধ খেলে শারীরিক অবস্থা আরও জটিল হতে পারে। চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ও মারা যাওয়া রোগীর বেশির ভাগের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, আগে থেকে তারা নানা রোগে আক্রান্ত। বয়স্করাও এর ঝুঁকিতে রয়েছেন।