NEWSTV24
মগবাজারে আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু
সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫ ১৭:১৫ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

রাজধানীর মগবাজারে আবাসিক হোটেলে স্বামী-স্ত্রী ও তাদের ১৭ বছরের সন্তানের রহস্যজনক মৃত্যু হয়েছে। দম্পতি ও তাদের সন্তানের মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানে নেমেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা। মৃতরা হলেন, লক্ষ্মীপুর রামগঞ্জ উপজেলার মনির, তার স্ত্রী স্বপ্না ও তাদের সন্তান আরাফাত।রবিবার (২৯ জুন) রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে ওই দম্পতি তাদের সন্তানকে নিয়ে লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ থেকে শনিবার বিকেলে ঢাকার মগবাজারের হোটেল সুইট স্লিপে ওঠেন। সোমবার সকালে দম্পতির এক আত্মীয় তাদের হোটেলে আসেন। তখন তিনি দেখতে পান স্বপ্না ও তাদের সন্তান বমি করছেন। একপর্যায়ে স্বপ্না ও তার সন্তানকে একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাদের মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসক। এরই মধ্যে মনির অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাকে আইসিইউতে নেওয়া হলে সেখানে তার মৃত্যু হয়।ডিসি মাসুদ আলম জানান, মরদেহ তিনটি বর্তমানে পুলিশ হেফাজতে আছে। আইনি প্রক্রিয়া শেষে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল হাসপাতাল কলেজের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

পুলিশ ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শারীরিক প্রতিবন্ধী ছেলে নাঈমের চিকিৎসার জন্য শনিবার পরিবারটি ঢাকায় আসে। গ্রামে থাকলেও ঢাকার পোস্তগোলা এলাকায় মনির হোসেনের একটি পাঁচতলা বাড়ি রয়েছে। বাড়িটি দেখভাল করেন রফিকুল ইসলাম। তাঁকে সঙ্গে নিয়েই মগবাজারের হোটেল সুইট স্লিপে আসেন তাঁরা। পাশের একটি খাবারের হোটেল থেকে খাবার এনে খেয়েছিলেন। পরে রাতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।হোটেল সুইট স্লিপের সহকারী ব্যবস্থাপক আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, শনিবার বিকেলে মনির হোসেন তাঁর প্রতিবন্ধী ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে হোটেলে আসেন। রফিকুল ইসলাম নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র দিয়ে হোটেল ভাড়া করেন। হোটেলের সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গেছে, সন্ধ্যার দিকে একটি ব্যাগে করে খাবার নিয়ে আসেন রফিকুল। পরে তিনি চলে যান। রাত আটটার দিকে মনির হোসেন নিচে নামেন। পরে পানি নিয়ে ওপরে উঠে যান মনির।আনোয়ারুল ইসলাম আরও বলেন, তাঁরা অসুস্থ হলেও হোটেলের কাউকে কিছু জানাননি। বেলা ১১টার দিকে রফিকুল তাঁর মেয়েকে নিয়ে হোটেলে আসেন। তিনি প্রথমে স্বপ্না আক্তারকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যান। এর প্রায় আধা ঘণ্টা পরে এসে মনিরকে হাসপাতালে নিয়ে যান। কক্ষে রফিকুলের মেয়ের চিৎকার শুনে হোটেলের কর্মচারীরা অচেতন অবস্থায় এই দম্পতির ছেলে নাঈমকে হাসপাতালে নিয়ে যান।

এ বিষয়ে রমনা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম ফারুক বলেন, আমরা গুরুত্ব সহকারে ঘটনাটি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করছি। ইতোমধ্যে তাদের রুমের এবং পুরো হোটেলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। এ ছাড়া হোটেলের আশেপাশের এলাকার সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছি। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে দেখার চেষ্টা করছি তাদের রুমে কেউ এসেছিল কিনা সন্দেহজনক কোন ব্যক্তি।এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মৃত্যুর প্রকৃত কারণ ময়নাতদন্ত ছাড়া বলা সম্ভব না। তবে আমরা দুটি বিষয়কে সামনে রেখে তদন্ত করছি। আমাদের প্রাথমিক ধারণা খাদ্যে বিষক্রিয়ার কারণে অথবা, তাদেরকে কেউ বিষাক্ত কোনো খাবার খাইয়েছে ইচ্ছাকৃতভাবে, তার কারণেও তাদের মৃত্যু হতে পারে। প্রাথমিকভাবে আমরা কোনো নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি। আমাদের তদন্তে এবং মরদেহের ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন এলে তাদের মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।