জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের সঙ্গে বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলগুলো দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনা চলাকালে সংবিধানের ৪৮(১) অনুচ্ছেদে বিদ্যমান রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতিটিকে পরিবর্তন করে নতুন পদ্ধতি প্রণয়নের বিষয়ে তাদের মত প্রদান করেছে।বৃহস্পতিবার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে দিনব্যাপী রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে দ্বিতীয় পর্যায়ের আলোচনার চতুর্থ দিন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি।আজকের আলোচনার বিষয়বস্তু সম্পর্কে অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, আলোচনার ফলে প্রায় সকল রাজনৈতিক দল রাষ্ট্রপতি নির্বাচন পদ্ধতি পরিবর্তন বিষয়ে একমত হয়েছে। তারা বলেছে যে, বিদ্যমান ৪৮(১) অনুচ্ছেদ এর পরিবর্তন করতে হবে। তবে পরিবর্তিত ও সংশোধিত ব্যবস্থা কী হবে তা নিয়ে আমরা পরবর্তীতে আলোচনা করব।তিনি আর বলেন, যেহেতু রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদ্ধতি পরিবর্তনের সঙ্গে দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভার ব্যাপারটি জড়িত আছে, সেহেতু আজ সেই বিষয়টিও আমরা আলোচনা করেছি। দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা ব্যাপারে যারাই মত দিয়েছেন তারা প্রায় সকলে উচ্চকক্ষে ১০০ আসনের বিষয়ে একমত হয়েছেন। কিন্তু এসব বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট আরও বিষয় নিয়ে আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে।
আলী রীয়াজ বলেন, একজন ব্যক্তি প্রধানমন্ত্রীর পদে পরপর দুই মেয়াদে থাকবেন এ বিষয়ে অনেকে একমত হয়েছেন। আবার কেউ কেউ পরপর দুই মেয়াদের পর বিরতি দিয়ে আবার পুনরায় প্রধানমন্ত্রী পদ পালন করতে পারবে কি না সে বিষয়ে বিবেচনা করার অনুরোধ কমিশনকে জানিয়েছে।অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনা সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিটি দল স্বাধীনভাবে নিজেদের মতামত জানাতে পারছে। মত ভিন্নতা থাকলেও মতামত প্রদানে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ বিরাজ করছে।আগামী রবিবার সকাল সাড়ে ১০টায় পুনরায় সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার পঞ্চম বৈঠকে কমিশন বসবে বলেও জানান তিনি।তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আগামী সপ্তাহের আলোচনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোতে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একটি ঐকমত্য সৃষ্টি হবে। কমিশন এবং রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একমত হওয়ার সদিচ্ছা রয়েছে।
এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে আজকের আলোচনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), গণঅধিকার পরিষদ, গণসংহতি, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি), বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টিসহ ৩০টি রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করে।