কক্সবাজারে আরও ৫ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। এ নিয়ে নতুন রোহিঙ্গার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ১৮ হাজার। ২০২৩ সালের নভেম্বর থেকে ১ মে পর্যন্ত তারা বাংলাদেশে ঢুকেছে। এদের নতুন রোহিঙ্গা হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। এর আগে থেকে কক্সবাজারের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে আরও ১২ লাখ রোহিঙ্গা। সরকারের শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।গতকাল শনিবার রাতে মিজানুর রহমান বলেন, নতুনভাবে আসা রোহিঙ্গার সংখ্যা ১ লাখ ১৮ হাজারে দাঁড়িয়েছে। তারা কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে আছে। কেউ আবার বিদ্যালয়সহ রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বিভিন্ন স্থাপনায় আশ্রয় নিয়েছে।নতুন রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলের ব্যবস্থা করতে সম্প্রতি জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশন (ইউএনএইচসিআর) বাংলাদেশকে চিঠি দিয়েছে। তবে গতকাল পর্যন্ত বাংলাদেশ চিঠির জবাব দেয়নি বলে জানান মিজানুর রহমান।
তিনি বলেন, নতুন আসা রোহিঙ্গাদের আবাসস্থলের ব্যবস্থার অনুরোধ জানিয়ে ইউএনএইচসিআরের চিঠির জবাব আমরা এখনও দিইনি। তাদের খাবারের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে নতুনভাবে ঘর তৈরি করে দেওয়ার মতো অবস্থায় আমরা নেই। আমরা প্রত্যাবাসনে জোর দিচ্ছি।এদিকে সশস্ত্র গোষ্ঠী আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে মিয়ানমারের রাখাইনের মংডু বুড়া শিকদাপাড়া এলাকায় রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চালানো হচ্ছে বলে জানা গেছে। দেশটির রাখাইন রাজ্যের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সশস্ত্র সংগঠন আরাকান আর্মির সদস্যরা এ নিপীড়ন চালাচ্ছে। এতে টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের পূর্বদিকে অবস্থিত শিকদারপাড়া থেকে অনেক রোহিঙ্গা কক্সবাজারে বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাসরত তাদের স্বজনের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন। কেউ কেউ পালিয়ে আসছেন।
পালিয়ে আসা এমনই একজন আমির হোসেন। টেকনাফের জাদিমুড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আশ্রয় নেওয়া আমির জানান, তার কিছু স্বজন এখনও শিকদাপাড়ায় বসবাস করছে। শনিবার তাদের সঙ্গে যোগাযোগ হয়েছে। এদিন সকালে গ্রামে ঢুকে খোলা আকাশের দিকে গুলি চালায় আরাকান আর্মি। এর পর মাইকিং করে ঘর থেকে সবাইকে বের হতে বলে। এক পর্যায়ে একটি খালি মাঠে সবাইকে জড়ো করে। এ সময় আরসাকে কারা আশ্রয়-প্রশ্রয় দিচ্ছে, তাদের নাম প্রকাশ করতে বলা হয়। এর ব্যত্যয় হলে সবাইকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়।তিন মাস আগে পালিয়ে আসা আমির আরও জানান, রাখাইনের লডাইং, উচিংজং, নাকমুড়া, কুলি পাড়াসহ বেশ কিছু এলাকায় এখনও রোহিঙ্গাদের বসতি রয়েছে। সেখানে আরাকান আর্মি অনেকের ঘরে গিয়ে আরসার বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। সাধারণ রোহিঙ্গাদের দিনভর রোদের মধ্যে দাঁড় করিয়ে রাখছে তারা। এতে সেখানকান রোহিঙ্গারা ভয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে চেষ্টা করছে।আরাকান আর্মি নতুন করে মংডুতে হামলা চালাচ্ছে বলে জানিয়েছেন উখিয়া ক্যাম্পের রোহিঙ্গা নেতা মো. জুবায়ের। তিনি বলেন, আরসাকে আশ্রয় দেওয়ার বাহানা করে কাল চার গ্রামে হামলা চালানো হয়েছে। মূলত সেখানে এখনও থাকা রোহিঙ্গাদের তাড়িয়ে দিতে এ ধরনের অজুহাতে নির্যাতন চালাচ্ছে আরাকার আর্মি।