বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেছেন, লোডশেডিংয়ের বিষয়টি অস্বীকার করার উপায় নেই। লোডশেডিং হচ্ছে, হবে। তবে সেটা সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করা হবে। গরম বেশি হলে এবং বিদ্যুতের চাহিদা বেড়ে গেলে তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বেশি চালানো হবে। এ ক্ষেত্রে শহর ও গ্রামে সমানভাবে লোডশেডিং করা হবে।গতকাল রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান এসব তথ্য জানান। জাতীয় গ্রিডে (আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ) বিপর্যয়ের কারণে গত শনিবার দক্ষিণাঞ্চলের প্রায় ২১ জেলা বিদ্যুৎহীন হয়ে পড়ে। গতানুতিক প্রক্রিয়ার মতো এ ঘটনার কারণ খুঁজে বের করতেও একটি তদন্ত কমিটি করেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ। সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্যও জানান উপদেষ্টা। এ সময় তিনি একটি অফিস আদেশ সাংবাদিকদের কাছে সরবরাহ করেন।
লোডশেডিংয়ের বিভিন্ন তথ্য সাংবাদিকরা তুলে ধরলে উপদেষ্টা বলেন, লোডশেডিং নিয়ে অনেক ভুল তথ্য দেওয়া হয়। আমি অস্বীকার করছি না, লোডশেডিং করা হচ্ছে। লোডশেডিং হচ্ছে এবং হবে। এনএলডিসি (ন্যাশনাল লোড ডেসপাস সেন্টার) ও ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানিগুলো থেকে লোডশেডিংয়ের প্রকৃত তথ্য পাওয়া যেতে পারে। তারা কতটুকু বিদ্যুৎ পাচ্ছে আর তাদের চাহিদা কত- একটা হিসাব করলেই লোডশেডিং হচ্ছে কি না, পাওয়া যাবে। আমি অনেক জায়গায় গিয়ে দেখেছি যে লোডশেডিং নিয়ে মিথ্যা তথ্য দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, বিভিন্ন কারণে আপনার বাড়িতে বিদ্যুৎ না-ও থাকতে পারে। ট্রান্সমিটার নষ্ট থাকতে পারে। গত সরকারের আমলে নিম্নমানের পণ্য কেনা হয়েছে। এ জন্য এগুলো বেশি হচ্ছে।
ফাওজুল কবির খান বলেন, আমরা এখন সাড়ে ১৬ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। চাহিদা তো আরও বাড়বে। মূলত তাপমাত্রার ওপর এটি নির্ভর করছে। তাপমাত্রার ওপর নির্ভর করে চাহিদা ১৮ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত যেতে পারে। তিনি বলেন, আমরা তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো এখন পুরোদমে চালাচ্ছি না, যখন চাহিদা বাড়বে তখন সেগুলো আরও চালানো হবে।লোডশেডিং আমরা সহনীয় পর্যায়ে রাখার চেষ্টা করব। শহর ও গ্রাম এলাকায় লোডশেডিং সমানভাবে বণ্টনের চেষ্টা করব। বিষয়টি আমি আজ থেকে ব্যক্তিগতভাবে মনিটর করব। শহর ও গ্রামাঞ্চলে কী পরিমাণ লোডশেডিং হচ্ছে, সে তথ্য তাকে জানানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন উপদেষ্টা।খুলনা অঞ্চলে বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের বিষয়ে তিনি বলেন, পাওয়ার গ্রিড বাংলাদেশ যেটা দেখেছে সেটা হলো, আমিনবাজার-গোপালগঞ্জ ডাবল লাইনে একটা ফল্ট হয়েছে। দুটি তার একত্র হয়ে যাওয়ায় এটা হয়েছে। এতে বিদ্যুৎ জেনারেশন ইউনিটগুলো বন্ধ হয়ে যায়। এ বিদ্যুৎ বিপর্যয়ের কারণে ২ হাজার ২৭৭ মেগাওয়াটের সাতটি বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়। এরই মধ্যে সবগুলো বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হয়েছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে এখন আর কোনো সমস্যা নেই বলেও জানান তিনি। তিনি বলেন, এর আগে বিপর্যয়ের সময় গঠিত কমিটির সুপারিশ বাস্তবায়ন অগ্রগতির বিষয়ে আমরা জানতে চাইব। সেগুলো বাস্তবায়ন হয়েছে কিনা কিংবা না হলে কেন হয়নি- এ বিষয়গুলোও কমিটি দেখবে।