ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ এবং চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের বিষয়ে একমত হয়েছেন সিপিবিসহ বাম ও গণঅধিকার পরিষদের নেতারা। গতকাল রবিবার বিএনপির সঙ্গে অনুষ্ঠিত পৃথক বৈঠকে তারা একমত পোষণ করেন। বিকালে বনানীর হোটেল শেরিনায় সিপিবিসহ বাম নেতাদের সঙ্গে এবং গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠক হয়।বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত শনিবার থেকে যুগপৎ আন্দোলনের শরিক জোট ও দলসহ ডান-বাম এবং ইসলামিক দলগুলোর সঙ্গে বৈঠক শুরু করে বিএনপি। এরই অংশ হিসেবে গতকালের বৈঠকে সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশীদ ফিরোজ, কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন প্রমুখ অংশ নেন। বৈঠকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির নেতা ও জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন। তবে এটিকে বৈঠক বলতে নারাজ বাম দলগুলোর নেতারা। তারা চা-চক্র হিসেবে আখ্যা দেন। এতে নির্বাচন, রাষ্ট্র সংস্কার ছাড়াও দেশের বিদ্যমান রাজনীতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ সময় বিএনপির পক্ষ থেকে বাম গণতান্ত্রিক জোটের সঙ্গেও বৈঠকের বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। আগামীতে এ বৈঠক হতে পারে বলে বাম নেতারা ইঙ্গিত দেন।
বৈঠকে সংস্কার বাস্তবায়নের জন্যই যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের পক্ষে মত দেন বাম নেতারা। তারা বলেন, নানান বিষয়ে মতপার্থক্য থাকবে। তবে সিদ্ধান্ত নেবে জনগণ। জনগণকে যদি এই সংস্কারে সম্পৃক্ত করা না যায় তাহলে এসব উদ্যোগ বালির বাঁধের মতো ভেঙে যাবে। এখন যে প্রক্রিয়ায় হচ্ছে তাতে দীর্ঘস্থায়ী ফল আসবে না। এ জন্য দরকার নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করা।সিপিবির সাবেক সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ফ্যাসিবাদ সরকার উন্নয়নের দোহাই দিয়ে ক্ষমতায় চিরস্থায়ীভাবে থাকার চেষ্টা করেছিল। তারা জনগণের মতামত তোয়াক্কা করে নাই। এখন যদি কেউ বা অন্য নামে অনির্বাচিত সরকার ক্ষমতায় থাকতে চায় তাহলে তারাও একই কাতারে পড়বে।গণঅধিকার পরিষদের সঙ্গে বৈঠকে ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের দাবির সঙ্গে রাষ্ট্রীয় সংস্কারে সব দল ও মতের ঐকমত্যের ভিত্তিতে জাতীয় সনদ তৈরির বিষয়েও একমত হয়েছেন নেতারা। তারা মনে করেন, যেসব বিষয়ে ঐকমত্য হবে সেসব সংস্কার আগামী ডিসেম্বরের আগে করা সম্ভব। যেগুলো করা সম্ভব হবে না সেগুলো জাতীয় সনদ আকারে সব দলের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি থাকবে। যারাই ক্ষমতায় আসবে তারা ওইসব সংস্কার বাস্তবায়ন করবেন। তবে সংস্কার ঘিরে নির্বাচন পেছানোর অজুহাত মানা হবে না।