NEWSTV24
গাজা যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব : লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির
বুধবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৫ ০১:১৯ পূর্বাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

গাজা যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব বলে মন্তব্য করেছেন ইসরাইলি সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল ইয়াল জামির। মঙ্গলবার (১৫ এপ্রিল) মিডল ইস্ট মনিটরের এক প্রতিবেদনে এদই তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ইসরাইলি সেনাবাহিনীর জন্য হামাসকে নির্মূল করার ঘোষিত লক্ষ্যসহ অন্যান্য গাজা যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। যদি ঘোষিত লক্ষ্য অর্জন করতেই হয়, তাহলে সৈন্য সঙ্কট দূর করতে হবে। একইসাথে সেনাবাহিনীর কাঠামোতেও মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে।

ইসরাইলের প্রভাবশালী দৈনিক ইয়েদিওথ আহরোনোথে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজনৈতিক নেতৃত্বের সাথে সাম্প্রতিক এক আলোচনায় জামির সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ‘বর্তমান বাহিনীর অধীনে গাজা যুদ্ধের লক্ষ্য অর্জন করা অসম্ভব। বিশেষ করে সরকার কর্তৃক নির্ধারিত লক্ষ্যগুলোর কিছু অর্জন অনেক কঠিন। কারণ, এখন সেনাবাহিনীতে জনবলের উল্লেখযোগ্য ঘাটতি রয়েছে।’

তিনি আরো বলেন, যদি সেনাবাহিনী ভবিষ্যতের জন্য সংগঠিত ও কৌশলগত পরিকল্পনা গ্রহণ না করে এবং কেবল বিদ্যমান যোদ্ধাদের উপর নির্ভর করতে থাকে, তবে গাজায় চলমান বিশৃঙ্খলা আরো ঘনীভূত হয়ে পড়বে। বিশেষ করে হামাসকে ধ্বংস করার যে লক্ষ্য যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই ঘোষণা করা হয়েছে, তা এখনো অধরাই থেকে গেছে।

জামির উল্লেখ করেন, ‘হামাস অভিযানের শুরু থেকেই তার কৌশলগত নীতি অব্যাহত রেখেছে। আঘাত হানার পরেও তারা সক্ষমতা বজায় ধরে রেখেছে।’

এর আগে, ২০২৪ সালের জুন মাসে ইসরাইলি দৈনিক হারেৎজ এক প্রতিবেদনে জানায়, বহু রিজার্ভ সৈন্য ঘোষণা করেছে যে তারা গাজায় আর সেনা পরিষেবায় ফিরবে না। এমনকি যদি তাদের শাস্তিও দেয়া হয় তবুও নয়।

একই সময় ইসরাইলি গণমাধ্যমে রিপোর্ট করা হয়, শত শত রিজার্ভ সৈন্য গোপনে বিদেশে পাড়ি দিয়েছে। অনেকেই তাদের ইউনিট বা কমান্ডারদের না জানিয়েই চলে গেছে।

এই পরিস্থিতির পেছনে একটি বড় কারণ হিসেবে উঠে এসেছে সৈন্যদের মধ্যে প্রচণ্ড মানসিক চাপ ও উদ্বেগ। অব্যাহত লড়াইয়ের কারণে তাদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক এবং পেশাগত জীবনে যে প্রভাব পড়ছে, তা নিয়েও তারা গভীরভাবে চিন্তিত। এমনকি অনেকে বিদেশে গিয়ে আইনি ব্যবস্থার মুখোমুখিও হয়েছেন, যেখানে আন্তর্জাতিক অধিকার সংগঠন ও আইনজীবীরা গাজায় সংঘটিত সহিংসতার জন্য ইসরাইলি বাহিনীর সদস্যদের জবাবদিহির আওতায় আনার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।

গাজা যুদ্ধ শুরুর দেড় বছর পরও হামাস উপত্যকার বেসামরিক ও সামরিক নিয়ন্ত্রণ ধরে রেখেছে, যা ইসরাইলি সামরিক প্রচেষ্টার কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এই প্রেক্ষাপটে ইসরাইলি সেনাপ্রধানের এমন মন্তব্য যুদ্ধের ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা ও নীতিনির্ধারকদের পরিকল্পনা নিয়ে নতুন বিতর্কের জন্ম দিয়েছে।

সূত্র : মিডল ইস্ট মনিটর