NEWSTV24
ভোটের উপযুক্ত সময় ডিসেম্বর-জানুয়ারি
শনিবার, ২১ ডিসেম্বর ২০২৪ ১৪:৪৫ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

দেশের আবহাওয়া, শিক্ষা কার্যক্রম, কৃষিপ্রধান দেশ হিসেবে কৃষকদের অবসরকালসহ আরও অনেক বিষয় ও শ্রেণিপেশার মানুষের কথা বিবেচনায় রেখে জাতীয় নির্বাচনের সময়কাল নির্ধারণ করা হয়ে থাকে। বছরের কোন সময়ে নির্বাচন করলে ভোটারদের অবাধ ও স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি থাকতে পারে, সেটিও মাথায় রাখা হয়। সব মিলিয়ে ডিসেম্বর-জানুয়ারি মাসকেই জাতীয় নির্বাচনের উপযুক্ত সময় বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। নির্বাচন কমিশনও (ইসি) সাধারণত ডিসেম্বর-জানুয়ারিকে উপযুক্ত সময় বিবেচনা করে তফসিল ঘোষণা করে থাকে। অবশ্য বছরের অন্য সময়েও নির্বাচন অনুষ্ঠানের রেকর্ড রয়েছে।প্রসঙ্গত, সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে যাওয়ার পরবর্তী ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতাও থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষেত্রে সংবিধানের এই বাধ্যবাধকতার বিষয়টি এখন আর গণ্য নয়।আবহাওয়া অফিসের তথ্যমতে, মার্চ-এপ্রিল-মে মাস হচ্ছে প্রাক মৌসুম। এই সময়টাতে দেশে বজ্রপাত, ঝড়ের প্রবণতা বেড়ে যায়। এরপর জুন-জুলাই-আগস্ট-সেপ্টেম্বরে বৃষ্টির প্রবণতা বেড়ে যায়। তাছাড়া এ সময় দেশের অনেক অঞ্চল বন্যায় তলিয়ে যেতে দেখা যায়। আবহাওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে এদেশে ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। সাধারণত নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে ধানকাটার কাজ শেষ হয়ে কৃষিকাজে সম্পৃক্ত জনগোষ্ঠী কিছু দিনের অবসর পান। যেহেতু এটি কৃষিপ্রধান দেশ এবং জাতীয় নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতির একটা বিষয় থাকে তাই ডিসেম্বর-জানুয়ারিকে নির্বাচনের উপযুক্ত সময় বলে মনে করা হয়।

এ ছাড়া দেশের শিক্ষাবর্ষ জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত। সাধারণত ডিসেম্বরের প্রথমদিকে স্কুলগুলোয় শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা শেষ হয়ে যায়। আর ডিসেম্বরের শেষ দিকে ফলও দেওয়া হয়ে যায়। জানুয়ারি থেকে শুরু হয় নতুন শিক্ষাবর্ষ। তাই ডিসেম্বর বা জানুয়ারি মাসে জাতীয় নির্বাচন করলে রিটার্নিং কর্মকর্তা হিসেবে শিক্ষকদের পাওয়া সহজ হয়ে যায়। একই সাথে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভোটকেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করলে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে ব্যাঘাত ঘটে না। অন্যদিকে রেওয়াজ অনুযায়ী ফেব্রুয়ারি-মার্চে এসএসসি এবং এর মাস দুয়েক পর এইচএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। জাতীয় নির্বাচনের আগে রমজান মাসের বিষয়টিও বিবেচনা করা হয়। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি সবচেয়ে উপযুক্ত সময়।আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ নিয়ে সরকার ও রাজনৈতিক দলের মধ্যে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক না হলেও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা একটা ধারণা দিয়েছেন। গত ১৬ ডিসেম্বর মহান বিজয় দিবসে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ২০২৫ সালের শেষে অথবা ২০২৬ সালের প্রথমাংশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন হতে পারে। একদিন পর প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানিয়েছেন ২০২৬ সালের জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে। এরপর এক প্রতিক্রিয়ায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমরা আশা করেছিলাম, প্রধান উপদেষ্টা রোডম্যাপ দেবেন। কিন্তু তিনি তা দেননি। এটা আমাদের হতাশ করেছে। তিনি বলেন, মুহাম্মদ ইউনূস নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়সীমা ২০২৫ সালের শেষ অথবা ২০২৬ সালের প্রথম অংশে অনুষ্ঠানের কথা বলেন, যা একেবারেই অস্পষ্ট এবং নির্দিষ্ট কোনো সময় উল্লেখ নেই। অথচ তার প্রেস সচিব বলেন যে, ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে, যা পরস্পরবিরোধী।