মেয়াদ শেষ হওয়ার এক বছর আগেই গত সপ্তাহে জার্মানিতে পতন ঘটেছে চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজের নেতৃত্বাধীন জোট সরকারের। এ পরিস্থিতিতে আগাম নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলো। আগামী বছরের ২৩ ফেব্রুয়ারি জার্মান পার্লামেন্টের নির্বাচনের নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।
জার্মানির ২১তম সাধারণ নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল আগামী বছরের ২৮ সেপ্টেম্বর। কিন্তু ৬ নভেম্বর জোটভুক্ত তিন শরিক দলের সভার পর চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎজ জোটভুক্ত ফ্রি গণতান্ত্রিক দলের সভাপতি ও অর্থমন্ত্রী ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে মন্ত্রী পদ থেকে বরখাস্ত করেন।
এ ঘটনার আগে জোটভুক্ত তিন দল সামাজিক গণতান্ত্রিক দল, পরিবেশবাদী সবুজ দল ও ফ্রি গণতান্ত্রিক দলের নেতারা বাজেট সংকট থেকে উত্তরণের উপায় বের করতে আড়াই ঘণ্টা আলোচনা করেন। মূলত আলোচনাটি ছিল, কীভাবে ২০২৫ সালের বাজেটের বাড়তি খরচ জোগানো এবং ক্ষতিগ্রস্ত জার্মান অর্থনীতিকে পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনা যায়।
সম্প্রতি ক্ষমতাসীন জোটে নতুন বাজেট ও অর্থনৈতিক নীতির বিষয়গুলো নিয়ে বিভক্তি দেখা দেয়। ৬ নভেম্বর ক্ষমতাসীন জোটের সভায় নানা বিষয় নিয়ে তিক্ততার কারণেই এই ভাঙন।
জার্মানির পার্লামেন্ট ও বড় রাজনৈতিক দলগুলোর একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে আগাম নির্বাচন আয়োজনের পক্ষে মত দিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। দলগুলোর সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, বড় কোনো জাতীয় বিপর্যয় না ঘটলে আগামী বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি মাসে জার্মানিতে আগাম নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে একটি সূত্র জানিয়েছে, আগাম নির্বাচনের বিষয়ে ওলাফ শলৎজের সোশ্যাল ডেমোক্র্যাটিক পার্টি এসপিডি এবং বিরোধী খ্রিস্টীয় গণতন্ত্রী বা সিডিইউ দলের মধ্যে বোঝাপড়া হয়েছে। ওই প্রেক্ষিতেই নির্ধারণ করা হয়েছে নির্বাচনের তারিখ। এছাড়া আগামী ১৬ ডিসেম্বর বিরোধীদের আস্থা ভোটের মুখোমুখী হতে হবে শলৎজকে। তবে যেহেতু তার নেতৃত্বাধীন সরকার ইতোমধ্যেই ভেঙে গেছে, তাই সেই ভোটের ফলাফল তার জন্য ইতিবাচক হবে— এমন আশা কম।
২০২১ সালের নির্বাচনে জিতে ক্ষমতায় আসেন জার্মানির রাজনৈতিক দল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির শীর্ষ নেতা শলৎজ। নির্বাচনে জয়ে পর ফ্রি ডেমোক্রেটিক পার্টি এবং গ্রিন পার্টি অব জার্মানি—দুই দলকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিদলীয় জোট সরকার গঠন করেন তিনি।
তবে গত কয়েক মাস ধরে জোট শরিক গ্রিন পার্টি অব জার্মানির সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল শলৎজের নেতৃত্বাধীন সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি। এই দ্বন্দ্বের জেরে গত ৭ নভেম্বর অর্থমন্ত্রী ও গ্রিন পার্টির নেতা ক্রিশ্চিয়ান লিন্ডনারকে পদচ্যুত করেন শলৎজ।