অবিলম্বে শিক্ষাসংস্কার কমিশন গঠনসহ শিক্ষাব্যবস্থার সার্বিক উন্নয়নের রূপরেখা উপস্থাপনকল্পে সংবাদ সম্মেলন করেছে চিন্তা ও জ্ঞান সংস্কারে নিবেদিত একটি থিংক ট্যাঙ্ক বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (বিআইআইটি)।
সোমবার (৭ অক্টোবর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) নসরুল হামিদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন শিক্ষাবিদ, গবেষক এবং শিক্ষা উদ্যোক্তা ড. এম আবদুল আজিজ এবং তার সাথে ছিলেন সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর অধ্যাপক ড. ইউসুফ এম ইসলাম, সেন্টার ফর ইসলামিক থট অ্যান্ড স্টাডিজের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শায়খ মুসা আল হাফিজ, অ্যাকাডেমিক গবেষক এবং মিডিয়া ব্যক্তিত্ব অধ্যাপক ড. আফরোজা বুলবুল, মিলিটারি ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির (এমআইএসটি) অধ্যাপক ড. সেলিন রহমান, সঞ্চালক ড. সৈয়দ শহীদ আহমাদ এবং লেখক ও গবেষক আনিসুর রহমান এরশাদ।
ড. এম আবদুল আজিজ বলেন, ‘স্বাধীনতার পর থেকে বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থার উন্নতির লক্ষ্যে বহু শিক্ষানীতি ও পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হলেও বেশিভাগ ক্ষেত্রে তা ছিল শাসকগোষ্ঠীর চিন্তা-চেতনাকে সাধারণ জনগণের ওপর চাপিয়ে দেয়ার প্রয়াস। এসব নীতিতে দেশের সংস্কৃতি, মূল্যবোধ ও দর্শনকে যথাযথভাবে গুরুত্ব দেয়া হয়নি। এর ফলে পাঠ্যক্রমে খেয়াল-খুশিমতো পরিবর্তন, রাষ্ট্রীয় অর্থের অপচয় এবং অপরিণামদর্শী সিদ্ধান্তের কারণে শিক্ষাব্যবস্থা প্রায় ধ্বংসের পথে দাঁড়িয়েছে।’
৫ আগস্ট তরুণ নেতৃত্বের গণজাগরণে স্বৈরাচারী শক্তির পতন ঘটার পর নতুন সম্ভাবনা ও পরিবর্তনের দ্বার উন্মোচিত হয়। এই নতুন অধ্যায়কে ‘বাংলাদেশ ২.০’ নামে অভিহিত করা হচ্ছে- যেখানে শিক্ষাব্যবস্থার সংস্কার ও পুনর্গঠন অন্যতম অগ্রাধিকার পাচ্ছে। জাতি গঠনের প্রধান নিয়ামক হিসেবে এ প্রজন্মের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত ভবিষ্যতের জন্য একটি শক্তিশালী ও কার্যকর শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তোলা।
জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০-এ মানবিকতা, যুক্তিবাদ, অসাম্প্রদায়িকতা এবং দেশপ্রেমের আদর্শ তুলে ধরা হলেও তা বাস্তবে কার্যকর হয়নি। বরং সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধের সমন্বয়হীন একটি সেকেলে শিক্ষা ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। ২০১২ সালের জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলে নৈতিক শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দেয়া হলেও তার বাস্তবায়নও সফল হয়নি। ২০২১ সালে চালু করা জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখা নীতিনির্ধারণে অদূরদর্শিতার ও জাতিসত্তার সাথে সাংঘর্ষিক উপাদান থাকায় এটিও ব্যর্থ হয়েছে। এছাড়াও উচ্চশিক্ষার লক্ষ্যে বিগত সরকারের গৃহিত সংশোধিত কৌশলগত কর্মপরিকল্পনার (২০১৮-২০৩০) ক্রিটিক্যাল রিভিও প্রয়োজন।
এমন পরিস্থিতিতে ‘বাংলাদেশ ২.০’-এর নতুন অধ্যায়ে শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠনের মাধ্যমে একটি শিক্ষিত, নৈতিক এবং দক্ষ প্রজন্ম গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদের সবার। এই লক্ষ্যে, দীর্ঘদিনের গবেষণা এবং পর্যালোচনার ভিত্তিতে, বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান ও থিংকট্যাঙ্ক- বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থটের (বিআইআইটি) পক্ষ থেকে শিক্ষা সংস্কারের লক্ষ্যে বিভিন্ন সুপারিশসহ উপস্থাপন করা হয়।
প্রেস বিজ্ঞপ্তি