NEWSTV24
বাংলাদেশে সংস্কারে অকুণ্ঠ সমর্থন
বৃহস্পতিবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:০১ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের বিরল বৈঠক নিয়ে বিবৃতি দিয়েছে হোয়াইট হাউস। এতে জানানো হয়, বৈঠকে বাইডেন বলেছেন, বাংলাদেশের নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন অব্যাহত থাকবে।স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সকালে (বাংলাদেশ সময় রাত) নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে দুই নেতার মধ্যে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। পরে বৈঠক বিষয়ে একটি বিবৃতি (রিডআউট) প্রকাশ করে হোয়াইট হাউস। এতে বলা হয়, মুহাম্মদ ইউনূস সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নিযুক্ত হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানাতে গতকাল তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৈঠকে উভয় নেতা যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যকার ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের বিষয়টি উল্লেখ করেন। বলেন, এই সম্পর্কের মূলে রয়েছে পারস্পরিক গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও জনগণের মধ্যকার শক্তিশালী বন্ধন।বিবৃতিতে বলা হয়, প্রেসিডেন্ট বাইডেন দুই সরকারের মধ্যে আরও সম্পৃক্ততাকে স্বাগত জানিয়েছেন। বাংলাদেশের নতুন সংস্কার কর্মসূচি বাস্তবায়নে মার্কিন সমর্থন অব্যাহত থাকবে।

রোহিঙ্গা সংকট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলনের আহ্বান

মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের নিয়ে জাতিসংঘ সদরদপ্তরে উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন প্রধান উপদেষ্টা। জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের ফাঁকে এ বৈঠক হয় বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ম্যানহাটানের গ্র্যান্ড হায়াত হোটেলে প্রেস ব্রিফিংয়ে তিনি বলেন, বৈঠকে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে তিনটি প্রস্তাব দিয়েছেন

১. জাতিসংঘ মহাসচিব যত দ্রুত সম্ভব রোহিঙ্গা সংকটের বিষয়ে সব পক্ষকে নিয়ে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন আহ্বান করতে পারেন। সম্মেলনে সংকটের সামগ্রিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা এবং উদ্ভাবনী ও অগ্রসর উপায়ে পরামর্শ দেওয়া উচিত।

২. জাতিসংঘ ও বাংলাদেশ যৌথভাবে পরিচালিত জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানকে শক্তিশালী করা দরকার। স্লাইডিং ফান্ডিং পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে রিসোর্স বাড়ানোর প্রক্রিয়াকে আরও রাজনৈতিক চাপ দিতে হবে।

৩. আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উচিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যামূলক অপরাধ মোকাবিলায় ন্যায়বিচার ও জবাবদিহির ব্যবস্থাকে গুরুত্ব সহকারে সমর্থন করা।

বৈঠকে মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত জুলি বিশপ, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার (ইউএনএইচসিআর) ফিলিপ্পো গ্রান্ডি, পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনসহ সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। এতে ড. ইউনূস বলেন, গত দুই মাসে আরও ২০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে। অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে রোহিঙ্গাদের আতিথেয়তা সত্ত্বেও একটি ঘনবসতিপূর্ণ দেশে সামাজিক, অর্থনৈতিক, পরিবেশগত ব্যয়ের ক্ষেত্রে এত বেশি খরচ হয়ে চলেছে; এগুলো আমাদের জন্য প্রথাগত ও অপ্রথাগত নিরাপত্তা ঝুঁকি। আমাদের নিজস্ব উন্নয়ন অনেকটাই ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। স্পষ্টতই বাংলাদেশ তার ধৈর্যসীমায় পৌঁছেছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যতই মানবিক দিক বা ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার বিষয়ে নিয়োজিত থাকুক, রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনই দীর্ঘস্থায়ী সংকটের একমাত্র টেকসই সমাধান।

সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করার আহ্বান

প্রধান উপদেষ্টা মঙ্গলবার জাতিসংঘ সদরদপ্তরে ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে পৃথক দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন।পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের নানা স্তরে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা পুনরুজ্জীবিত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস সার্ককে পুনরুজ্জীবিত করা ভালো উপায় হতে পারে বলে উল্লেখ করে পাকিস্তানের সমর্থন চেয়েছেন। শাহবাজ শরিফ এ উদ্যোগের জন্য তাঁর সমর্থনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তিনি আঞ্চলিক এ ফোরামকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলোকে ধাপে ধাপে এগিয়ে আসার পরামর্শ দেন।প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে জানানো হয়েছে, নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় বুধবার সকালে (বাংলাদেশ সময় রাত) ড. ইউনূসের সঙ্গে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হয়। জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের ফাঁকে দুই দেশের শীর্ষ নেতারা এ বৈঠক করেন।প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং জানিয়েছে, বৈঠকে শাহবাজ শরিফ বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন অধ্যায় খোলা উচিত। আমাদের সম্পর্ক পুনরুজ্জীবিত করা খুবই জরুরি।