বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-নাগরিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরাচারী সরকারের অবসান হলেও আর যাতে নতুন করে কোনো স্বৈরাচারের জন্ম হতে না পারে সে জন্য মানুষের আকাঙ্ক্ষাকে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ। দলের চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এমন দাবি জানিয়ে বলেন, স্বাধীনতার ৫৩ বছরের আমাদের সংবিধান ১৭ বার সংশোধন হলেও জনগণের আকাঙ্ক্ষা পূরণ করা সম্ভব হয় নাই।
মঙ্গলবার মজলুম জননেতা মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক উত্তরসূরী ও বাংলাদেশ ন্যাপ‘র সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন মন্ত্রী শফিকুল গাণি স্বপনের ৭৬তম জন্মবার্ষিকীতে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তারা এসব কথা বলেন। নেতৃদ্বয় শফিকুল গানি স্বপনের অমর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে বলেন, দেশবিরোধী সকল চক্রান্ত প্রতিরোধে শফিকুল গানি স্বপনের প্রদর্শিত পথে জাতীয় ঐক্যের রাজনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। ‘রাষ্ট্র সংস্কারের’ প্রশ্নে জাতীয় ঐকমত্যে সৃষ্টি করতে হবে।
তারা বলেন, বর্তমানের সাংবিধানিক কাঠামোই একনায়কতন্ত্রের জন্ম দিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রীর হাতে অভাবনীয় ক্ষমতা, যা সকল শাসকই কম বেশি অপব্যবহার করেছেন। আর পতিত স্বৈরাচারী সরকার এ ব্যবহার করেছে সর্বোচ্চ। এছাড়া সংবিধানের ৭ অনুচ্ছেদে ‘ক’ ধারায় এমন কিছু জিনিস আনা হয়েছে, যেটি সংশোধন করার সুযোগ নেই। সেজন্য ঐক্যমত ছাড়া সংবিধান সংস্করন বা পুনর্লিখনের আর কোনো উপায় নেই। দেশে গোঁজামিল দিয়ে সংবিধান সংশোধন করা হয়েছে বারবার। আবারো গোজামিল দিয়ে সংবিধান সংশোধন করলে ছাত্র-জনতার রক্তক্ষয়ী গণঅভ্যুত্থান অর্থাৎ জুলাই বিপ্লবের আকাঙ্ক্ষা অপূর্ণই থেকে যাবে।
উল্লেখ্য, ১১ সেপ্টেম্বর মজলুম মওলানা ভাসানীর রাজনৈতিক উত্তরসূরী, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ‘র সাবেক চেয়ারম্যান ও প্রাক্তন মন্ত্রী শফিকুল গাণির ৭৬তম জন্মবার্ষিকী।
প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক চেতনার মেধাবী রাজনীতিক শফিকুল গাণি স্বপন ১৯৪৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রংপুর জেলার আজকের নীলফামারী জেলার সদরে জাতীয় নেতা মশিউর রহমান যাদু মিয়ার ঔরষে জন্মগ্রহণ করেন। তার মা হচ্ছেন মরহুমা সাবেরা রহমান (ছবি)।
১৯৭৯ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর মশিউর রহমান যাদু মিয়া মৃত্যুবরণ করলে শফিকুল গাণি স্বপন রাজনৈতিক দৃশ্যপটে সরাসরি আর্বিভূত হন। পিতার মৃত্যুতে শূন্য আসনের উপ-নির্বাচনে তিনি জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রংপুর সদর ও নীলফামারীর ডোমার-ডিমলা আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন এবং বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
মত্যুর পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ-এর চেয়ারম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০০৯ সালের ২৩ আগস্ট তিনি ইন্তেকাল করেন।
শফিকুল গানি স্বপন নাজহাত গানি শবনমের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। নাজহাত গনি বাংলাদেশ ন্যাপের উপদেষ্টা ছিলেন। তার স্ত্রী ২২ জুন ২০১২ সালে মৃত্যুবরন করেছেন। তাদের তিন সন্তান। জেষ্ঠ্যপুত্র জেবেল রহমান গানি, কণ্যা ফারিয়া গানি ও কনিষ্ঠ পুত্র ব্যারিষ্টার মশিউর রহমান গানি। জ্যেষ্ঠপুত্র জেবেল রহমান গানি বর্তমানে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ'র চেয়ারম্যান। কনিষ্ঠপুত্র ব্যারিস্টার মশিউর রহমান গানি একজন আইনজীবী ও দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য।