NEWSTV24
রাজধানীর নিউমার্কেটে ব্যবসায়ীদের ক্ষতি
শনিবার, ১৩ জুলাই ২০২৪ ১৫:১৭ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

ছুটির দিনে শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেটে বিক্রি একটু বেশিই হয়। সারা সপ্তাহে যাদের সময় হয় না, তাদের অনেকেই এমন দিনে সকালে মার্কেটে গিয়ে কেনাকাটা সারেন। তবে আজ পুরো এলাকার চিত্র ছিল একেবারেই ভিন্ন। নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার অনেক দোকানে ছিল থই থই পানি। সকালে কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে হাঁটুসমান পানিতে ডুবে যায় সায়েন্স ল্যাবরেটরি মোড় থেকে শুরু করে নীলক্ষেত পর্যন্ত সড়ক। এতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মুখে পড়েছেন নিউমার্কেট ও ধানমন্ডি হকার্স মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।গাউছিয়া, চাঁদনীচক, নুরজাহান মার্কেটসহ অন্যান্য মার্কেট জলাবদ্ধতার জন্য বন্ধ থাকে। বৃষ্টির সময় সড়ক উপচে পানি প্রবেশ করে মার্কেটের ভেতর। দোকানে শাড়ি, অন্যান্য কাপড়, বই, জুয়েলারি পণ্যসহ সবকিছুই ভিজে গেছে। সব মিলিয়ে নিউমার্কেটে কয়েক কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে ব্যবসায়ীদের।২০২৩ সালের ২২ অক্টোবরের বৃষ্টিতেও ডুবে গিয়েছিল নিউমার্কেট। তখন পানি নামতে সময় লেগেছে ২৪ ঘণ্টার বেশি। শুক্রবার দুপুরে গিয়ে দেখা গেছে, পানিতে নেমে অনেকেই নিজেদের পণ্য বাঁচানোর চেষ্টা করছেন। একই অবস্থা দেখা গেছে আশপাশের মার্কেটগুলোতেও। রাত ৮টায়ও পানি পুরোপুরি নামেনি।

নিউমার্কেটে ফুটপাতের কাপড়ের দোকানি মো. জাহাঙ্গীর বলেন, এত পানি হয়েছে যে আমার মালপত্র কী অবস্থায় আছে, বুঝতে পারছি না। যারাই ভেতরে যাচ্ছে কেউ বলছে বুকপানি, কেউ বলছে কোমরপানি। ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই এই মার্কেট ডুবে যায়। ক্রেতা ফিরে যান। সিটি করপোরেশনকে আমরা যথাসময়ে রাজস্বের টাকা দিই। তার পরও তারা সমস্যা সমাধান করে না। সমিতির উদ্যোগে মাঝেমধ্যে সুয়ারেজ লাইন পরিষ্কার করি। তাহলে সিটি করপোরেশনের দরকার কী?

পানিতে নেমে নিজের দোকানের কিছু মালপত্র সরিয়ে এনেছেন সাইদ সজীব। তিনি বলেন, অনেক পানি ভেতরে। এক পর্যায়ে আর হাঁটতে পারি নাই, সাঁতরে গিয়েছি দোকান পর্যন্ত। আমার জুতার দোকান। যে জুতাই হাতে নিচ্ছি পানিতে ভিজে গেছে। ৫ থেকে ৮ লাখ টাকার সামগ্রী নষ্ট হয়েছে।আরিফ হাওলাদার নামে এক ব্যবসায়ী বলেন, হঠাৎ এত বৃষ্টি হবে বুঝতে পারিনি। সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখি এ অবস্থা। দ্রুত দোকানে এসে কিছু জিনিস সরাতে পেরেছি। আর অধিকাংশই পানিতে ভিজে নষ্ট হয়ে গেছে।নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন সন্ধ্যায় বলেন, সবগুলো দোকানের ভেতরেই এখন অন্তত এক ফুট পরিমাণ পানি। বইপত্র, কাপড়, তৈজসপত্র, জুয়েলারি সবকিছুই পানিতে ভিজে গেছে। আমাদের অনেক বড় ক্ষতি হয়ে গেল, যা টাকার অঙ্ক দিয়ে নির্ধারণ করা সম্ভব নয়। দোকানের ডেকোরেশনে যেসব বোর্ড ব্যবহার করা হয়, সেগুলো পানিতে অল্প ভিজে গেলেও পুরোটাই পরিবর্তন করতে হয়। আজ দীর্ঘ সময় ধরে সেসব বোর্ডসহ আনুষঙ্গিক জিনিসপত্র পানিতে ভিজছে। ভেতরে কী অবস্থা হয়েছে, তা পানি নামলে বলা যাবে।বারবার পরিষ্কার করার পরও প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবহারে সচেতনতার অভাবে ড্রেনগুলো বন্ধ হয়ে যায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রতি মঙ্গলবার মার্কেটের ড্রেনগুলো পরিষ্কার করা হয়। এর পর সবাই আবার বোতল, প্লাস্টিকের কাপ, পলিথিন এগুলো ফেলে ড্রেন বন্ধ করে দেয়। যতদিন পর্যন্ত নিজেরা সচেতন না হব, ততদিন এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতেই হবে। এ অবস্থা কাটিয়ে উঠতে কয়েক দিন লাগবে।