NEWSTV24
সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয়ে পতন
বুধবার, ০৩ জুলাই ২০২৪ ১৬:১৫ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রবাসী আয়ে সাড়ে ১০ শতাংশের বেশি প্রবৃদ্ধি হলেও শীর্ষস্থানে থাকা কয়েকটি দেশ থেকে রেমিট্যান্স কমে গেছে। এ তালিকায় আছে সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত ও কাতার। শুধু তাই নয়, গেল অর্থবছরে সৌদি আরবকে টপকে সংযুক্ত আরব আমিরাত রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষে উঠে এসেছে। আগের অর্থবছরে শীর্ষে থাকা সৌদি আরব নেমে এসেছে তৃতীয় অবস্থানে। তবে যুক্তরাষ্ট্র থেকে রেমিট্যান্স কমলেও আগের মতো দ্বিতীয় অবস্থানেই রয়েছে।সৌদি আরবে সাম্প্রতিক সময়ে বৈধ ভিসায় যাওয়া অনেক প্রবাসী শ্রমিক চাকরি পাচ্ছেন না; যাদের অনেকেই কাজ না পেয়ে দেশে ফিরে আসছেন। এসব কারণে সৌদি আরব থেকে প্রবাসী আয় কমে গেছে। আর গত দুই বছরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে- এ আশঙ্কায় সেখান থেকে দেশে অর্থ আসা বেড়ে গিয়েছিল। সে কারণে গত কয়েক বছর দেশটি থেকে প্রবাসী আয় অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পায়। নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা কেটে যাওয়ায় এখন আবার আয় আসা কমে গেছে।সৌদি আরব ও যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত বাংলাদেশি প্রবাসীরা সব সময় রেমিট্যান্স পাঠানোয় শীর্ষে থাকে। ২০২২-২৩ অর্থবছরেও তার ব্যতিক্রম ছিল না। তবে সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে শীর্ষ এই দুই দেশ থেকে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স কমেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছর সৌদি আরব থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২৭৪ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছর এসেছিল ৩৭৭ কোটি ডলার। দেশটি থেকে আগের অর্থবছরের তুলনায় গত অর্থবছর রেমিট্যান্স কমেছে ১০৩ কোটি ডলার বা ২৭ দশমিক ৩২ শতাংশ। গত অর্থবছর দেশটি থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স কমেছে।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত অর্থবছর রেমিট্যান্স কমেছে ৫৬ কোটি ডলার বা ১৫ দশমিক ৯০ শতাংশ। এ সময়ে দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছে ২৯৬ কোটি ডলার। আগের অর্থবছরে এসেছিল ৩৫২ কোটি ডলার। ২০২৩-২৪ অর্থবছর এই দুই দেশ ছাড়াও কুয়েত ও কাতার থেকে প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স কমেছে। গত অর্থবছর কুয়েত থেকে রেমিট্যান্স ৪ দশমিক ৪৮ শতাংশ কমেছে। আর কাতার থেকে কমেছে ২১ দশমিক ৩৭ শতাংশ।প্রবাসী শ্রমিকদের নিয়ে কাজ করে রিফিউজি অ্যান্ড মাইগ্রেটরি মুভমেন্ট রিসার্চ ইউনিট (রামরু)। সংস্থাটির প্রতিষ্ঠাতা চেয়ার তাসনিম সিদ্দিকী আমাদের সময়কে বলেন, সৌদি আরব থেকে বেশকিছু দিন ধরে রেমিট্যান্স কমেছে। মূলত যারা দেশটিতে যাচ্ছে অনেকে কাজ পাচ্ছেন না; যাদের অনেকেই দেশে ফিরে আসছেন। আবার অনেকে কাজ পেলেও বেতন পাচ্ছেন না। এসব কারণে সৌদি থেকে রেমিট্যান্স কমতে পারে। তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে গত কয়েক বছর অস্বাভাবিক রেমিট্যান্স বেড়েছিল। মূলত বাংলাদেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে পারে- এ আশঙ্কায় সেখান থেকে দেশে অর্থ আসা বেড়ে গিয়েছিল। নিষেধাজ্ঞার শঙ্কা কেটে যাওয়ায় এখন আবার আয় আসা কমে গেছে। তিনি আরও বলেন, রেমিট্যান্স আসা একেক সময় একেক দেশ থেকে বাড়ে-কমে, এটা স্বাভাবিক বিষয়। যদি রেমিট্যান্সের ওভারঅল প্রবৃদ্ধি ভালো হয়, তা হলে এটা খুশি হওয়ার বিষয়।

গেল অর্থবছর সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই) থেকে সবচেয়ে বেশি রেমিট্যান্স এসেছে বাংলাদেশে। যার পরিমাণ ৪৬০ কোটি ডলার। তার আগের অর্থবছর দেশটি থেকে রেমিট্যান্স এসেছিল ৩০৩ কোটি ডলার। অর্থাৎ বিদায়ী অর্থবছর দেশটি থেকে রেমিট্যান্স বেড়েছে ৫১ দশমিক ৮১ শতাংশ। জানা যায়, বর্তমানে দেশের ধনী গোষ্ঠী, উদ্যোক্তা ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের অন্যতম পছন্দের গন্তব্য হয়ে উঠেছে সংযুক্ত আরব আমিরাতের শহর দুবাই। দুবাইয়ে বাংলাদেশিদের ব্যবসাও বাড়ছে। এ কারণে বিশ্লেষকদের কেউ কেউ ধারণা করছেন, দেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের একটি অংশ হয়তো পাচারকারীরা ফেরত আনছেন প্রণোদনার সুবিধা নিতে। প্রণোদনার সুবিধা নেওয়ার পর সেই অর্থ হয়তো আবারও অবৈধ পথে পাচার হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে বৈধ পথে ইউএই থেকে প্রবাসী আয় আসা হঠাৎ করে বেড়ে গেছে।