NEWSTV24
জনসংযোগ পেশাকে ক্যারিয়ার হিসেবে বেছে নিতে পারেন
সোমবার, ১০ জুন ২০২৪ ১৫:৪৪ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

ব্র্যান্ডিং, যোগাযোগ ও বিপণন কাজে দুই দশকের অধিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন সফিকুল ইসলাম মিলটন স্ক্রিপ্টরাইটার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন ২০০৩ সালে। একাধিক বিজ্ঞাপনী সংস্থায় কাজ করার পর ২০০৮ সালে যোগ দেন ঢাকা ব্যাংকের কমিউনিকেশন্স অ্যান্ড ব্র্যান্ডিং ডিভিশনে। বর্তমানে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকে ফার্স্ট অ্যাসিস্ট্যান্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং কমিউনিকেশন্স ও ব্র্যান্ডিং ডিভিশনের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। বর্তমানে ব্র্যান্ডিং ও জনসংযোগ বিষয়টি কী পর্যায়ে রয়েছে পাশাপাশি ব্র্যান্ডিং ও জনসংযোগ অফিসার হিসেবে তরুণদের ক্যারিয়ার গড়ার কেমন সম্ভাবনা রয়েছে এমন নানা বিষয় নিয়ে তিনি কথা বলেছেন

একটি প্রতিষ্ঠানে ব্র্যান্ড এবং পিআর কীভাবে কাজ করে?
lজনসংযোগ/পাবলিক রিলেশনস বা পিআর হলো তথ্য ব্যবস্থাপনার এমন এক পক্ষ যা জনগণের উদ্দেশে তথ্য প্রচার কার্যক্রম পরিচালনা করে। জনসংযোগ মূলত সুপরিকল্পিত এক বিরামহীন কর্মপ্রয়াস যার মূল লক্ষ্য হলো প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে জনগণ, অংশীজন, সর্বোপরি টার্গেট গ্রুপের মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গিতে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সমঝোতা ও আস্থার সম্পর্ক গড়ে তোলা। বর্তমানে জনসংযোগের পরিধি বেশ বিস্তৃত। জনসংযোগের ক্ষেত্রে ব্র্যান্ড ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ব্র্যান্ড ক্ষেত্রবিশেষে ব্যক্তি, প্রতিষ্ঠান বা কোনো পণ্যও হতে পারে। ব্র্যান্ড জনগণের মধ্যে জনপ্রিয় করতে জনসংযোগ করার সময় কোনো ব্যক্তি বা সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ থাকে। অনিয়ন্ত্রিত কোনো প্রচারণা জনসংযোগের পর্যায়ে পরে না। আধুনিক যুগে প্রতিষ্ঠানগুলোর নিজস্ব জনসংযোগ বিভাগ থাকে। আবার অনেকে জনসংযোগ এজেন্সিগুলোর কাছেও নিজ প্রতিষ্ঠানের পিআরের দায়িত্ব দেয়। সারাবিশ্বেই এ ধরনের এজেন্সি বেশ জনপ্রিয় হচ্ছে। বর্তমানে কেউ ব্র্যান্ডিং ও জনসংযোগ অফিসার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করতে চাইলে তার সুযোগ কেমন আছে?


lবলা হয় বর্তমান যুগটা জনসংযোগের যুগ। বর্তমানে বাংলাদেশে জনসংযোগ কর্মকর্তা পদটি একটি আকর্ষণীয় পদ। এমন প্রতিষ্ঠান খুঁজে পাওয়া কঠিন যেখানে জনসংযোগ কার্যক্রম নেই। প্রচণ্ড প্রতিযোগিতার এই সময়ে নিজের ব্র্যান্ড ভ্যালু সমুন্নত রাখতে জনসংযোগের বিকল্প নেই। ভবিষ্যতে এই পরিধি আরও বৃদ্ধি পাবে। যেহেতু এখানে বুদ্ধিবৃত্তিক কাজই বেশি, সেহেতু অদূর ভবিষ্যতে এই সেক্টরে অটোমেশনের সুযোগ কম। তাই ক্যারিয়ার হিসেবে জনসংযোগকে বেছে নেওয়াটা মোটেও কোনো ভুল সিদ্ধান্ত হবে না ।
এই বিভাগে কাজের চ্যালেঞ্জগুলো কী কী?lজনসংযোগ কাজই করে নানা প্রতিবন্ধকতা নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের মুখপাত্র হিসেবে কাজ করেন জনসংযোগ কর্মকর্তা। ফলে দুঃসময়ের কাণ্ডারি হয়ে ব্র্যান্ডের জনপ্রিয়তা রক্ষা করতে গিয়ে অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়। কেননা চ্যালেঞ্জের সময়ই জনসংযোগ দরকার হয় সবচেয়ে বেশি। প্রতিষ্ঠানের দুর্দিনে সাবলীলভাবে ইতিবাচক বক্তব্য প্রদানের মাধ্যমে জনগণের মনে প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ইতিবাচক ধারণা প্রতিষ্ঠা করা বেশ চ্যালেঞ্জিং কাজ। বিভিন্ন গণমাধ্যম, প্রভাবশালী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি ও ধরে রাখা অনেক সময়ই কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। কাজ শেষ তো সম্পর্ক শেষ, এমন ধ্যান-ধারণার মানুষের জন্য জনসংযোগ নয়। কেবল যে বাহ্যিক চাপ সামলানোই চ্যালেঞ্জিং এমনটা নয়। প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ ও বিভিন্ন বিভাগের চাপও ঠান্ডা মাথায় সামাল দিতে হয় জনসংযোগ কর্মকর্তার। অনেক সময় নেতিবাচক নানা সংবাদ ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। সেগুলোর বিপরীতে প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য তৈরি ও ভাবমূর্তি ধরে রাখতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া বেশ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়। জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতে চাইলে এসব চ্যালেঞ্জ মাথায় রেখেই করতে হবে।কোন বিভাগের শিক্ষার্থীরা ব্র্যান্ডিং, যোগাযোগ বাজনসংযোগের ক্ষেত্রে চাকরির অগ্রাধিকার পান?
বর্তমানে দেশের বেশকিছু পাবলিক ও প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ রয়েছে। যেহেতু এই পেশায় এলে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে একটা ভালো সম্পর্ক বজায় রাখতে হয় তাই এ বিভাগে যারা অধ্যয়ন করেছেন তারাই বেশি সুযোগ পেয়ে থাকেন। এতে তারা দক্ষতার সঙ্গে নিজ দায়িত্ব পালন করার সুযোগ পান। তবে যথেষ্ট আগ্রহ থাকলে অন্যান্য বিভাগে পড়াশোনা করেও এই সেক্টরে কাজ করা যায়। অনেকেই জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করছেন।যেসব শিক্ষার্থী ব্র্যান্ডিং, যোগাযোগ, জনসংযোগ বা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ক্যারিয়ার গড়তে চান তাদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?
একজন দক্ষ জনসংযোগ কর্মকর্তা হতে চাইলে বহুমাত্রিক গুণাবলি থাকা জরুরি। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত সব বিষয় সবসময় মাথায় রাখতে হবে। তাই যারা ভবিষ্যতে জনসংযোগ কর্মকর্তা হিসেবে সরকারি-বেসরকারি নানা প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে আগ্রহী তাদের উচিত এখন থেকেই নিজের যোগাযোগ দক্ষতা বৃদ্ধি করা ও জনসংযোগ নিয়ে পড়াশোনা করা। বর্তমানে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যে কোনো বিষয়ের মতো জনসংযোগ নিয়েও পড়াশোনা করা সম্ভব। সাংগঠনিক দক্ষতা অর্জন করতে হলে ছাত্রজীবন থেকেই বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত থেকে নেতৃত্বের গুণাবলি অর্জন করতে হবে। পত্রপত্রিকায় লেখালেখি করার প্রচেষ্টা চালাতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সময় থেকেই। তাহলে আগে থেকেই বিভিন্ন গণমাধ্যমের সঙ্গে সম্পর্ক তৈরি হবে যা একজন জনসংযোগ কর্মকর্তার জন্য বেশ জরুরি।