NEWSTV24
সিলেটে বন্যা ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে
শুক্রবার, ৩১ মে ২০২৪ ১৪:৩১ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

ভারী বৃষ্টি আর পাহাড়ি ঢলে আকস্মিক বন্যার কবলে পড়েছে সিলেট। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত আট উপজেলার অন্তত তিন লক্ষ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়ে। রাত পর্যন্ত অব্যাহত ছিল নদীর পানি বৃদ্ধি। মঙ্গলবার থেকেই আশ্রয়কেন্দ্র খোলার প্রস্তুতি নিয়েছিল জেলা প্রশাসন। গবাদিপশু নিয়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছেন নিম্নাঞ্চলের বাসিন্দারা। আকস্মিক বন্যায় হতবিহ্বল নারী-শিশুকে বৃহস্পতিবার দিনভর আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে দেখা যায়। তবে ঢল কমে আসায় পানিবন্দি ভিটায় রয়ে গেছেন পুরুষ সদস্যরা।জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার পানিবন্দি অনেক পরিবার আশ্রয়কেন্দ্রে আসতে পারছেন না নৌকার অভাবে। নদ-নদীতে পানি বেড়ে যাওয়া ও বন্যার কারণে সিলেট জেলার সব পর্যটনকেন্দ্র বন্ধ ঘোষণা করেছে প্রশাসন। এদিকে জনস্বার্থে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের বিদ্যুৎ, পানি, স্বাস্থ্য ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনা শাখার সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিল করা হয়।জৈন্তাপুর, গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট জকিগঞ্জ ও কোম্পানীগঞ্জের বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। এর মধ্যে প্লাবিত হয়েছে অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও। জৈন্তাপুরের সারিঘাট এলাকার বাসিন্দা তাজুল মিয়া বলেন, রাতে হঠাৎ করেই ঘরে পানি ঢুকে যায়। নৌকা না পেয়ে অসহায় হয়ে পড়ি। গ্রামের প্রায় সবারই এ অবস্থা ছিল। সকালের দিকে আমাদের উদ্ধার করে এলাকাবাসী।

ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে সৃষ্ট প্রবল বৃষ্টিতে ভারত সীমান্তবর্তী জৈন্তাপুরের সারি নদীর পানি আগেই বিপদসীমার উপরে ছিল। সেই সঙ্গে বুধবার রাতে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে নামা ঢলে সুরমা, কুশিয়ারাসহ অন্যান্য নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে তলিয়ে যায় গোয়াইনঘাট, কানাইঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানীগঞ্জ ও জকিগঞ্জ উপজেলার নিম্নাঞ্চল।জৈন্তাপুর উপজেলা চেয়ারম্যান লিয়াকত আলী জানান, উপজেলার টিলা এলাকা ছাড়া বাকিসব এলাকাই প্লাবিত হয়েছে।কোথাও কোথাও মানুষের বাড়ির ছাউনি পর্যন্ত পানিতে ডুবে গেছে। এতে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। মানুষদের উদ্ধার করা গেলেও গবাদিপশুর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে।গোয়াইনঘাট ইউএনও মো. তৌহিদুল ইসলাম জানান, বন্যায় উপজেলার ৭৫ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়ে লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়েছেন। জাফলং-বিছনাকান্দিসহ সব পর্যটন এলাকার পর্যটকবাহী নৌকা নিয়ে উদ্ধার অভিযান চলছে।

কানাইঘাটে বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে হাজার হাজার মানুষ পানিবন্দি অবস্থায় দুর্বিষহ জীবনযাপন করছেন। বেশির ভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও পানিতে তলিয়ে গেছে। ইউএনও ফারজানা নাসরিন বলেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।সিলেটের এডিসি (সার্বিক) মোহাম্মদ মোবারক হোসাইন জানান, বন্যা পরিস্থিতি গোয়াইনঘাট ও জৈন্তাপুর উপজেলায় সবচেয়ে বেশি খারাপ। সেনাবাহিনী ইতোমধ্যে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রয়োজনে তারাও উদ্ধার অভিযানে যোগ দেবে।এদিকে বন্যাকবলিত লোকজনের জন্য জেলা প্রশাসন থেকে এক হাজার বস্তা শুকনো খাবার, ১৫ টন করে ৭৫ টন চাল, ৫০ হাজার টাকা করে আড়াই লক্ষ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে বরাদ্দ আরও বাড়ানো হবে।