NEWSTV24
চাহিদার চেয়ে পশু বেশি তবু দাম বাড়তি
শনিবার, ২৫ মে ২০২৪ ১৪:৪৪ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে পশু কেনাবেচা শুরু হয়ে গেছে। সেই সঙ্গে কোরবানির হাটের জন্য খামারগুলোতে ব্যাপক উদ্যমে চলছে প্রস্তুতি। সরকারি হিসাবে কোরবানির চাহিদার চেয়ে এ বছর ২২ লাখ ৭৭ হাজার ৯৭৩টি পশু অতিরিক্ত রয়েছে। খামারিদের কেন্দ্রীয় সংগঠন বাংলাদেশ ডেইরি ফারমার্স অ্যাসোসিয়েশনও (বিডিএফএ) বলছে, সরকারের হিসাব সঠিক; চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু রয়েছে। এ কারণে গতবারের চেয়ে এবার কোরবানির পশুর দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত কম থাকবে।কিন্তু খামারিরা, বিশেষ করে প্রান্তিক পর্যায়ের যারা, তারা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের মতে, মূল্যস্ফীতির বাজারে পশু খাবারসহ খামারের যাবতীয় ব্যয় অত্যধিক বেড়েছে। ফলে বাড়তি এ ব্যয়ের প্রভাব পশুর দামেও পড়েছে। তারা গতবারের চেয়ে এবার ২০-৩০ শতাংশ বেশি দামে পশু বিক্রি করছেন। খামারিদের মতে, চাহিদার চেয়ে এবার বেশি পশু রয়েছে বলে সরকারের যে হিসাব, তা মোটেও সঠিক নয়। তারা জানেনই না, সরকার কখন কীভাবে তাদের পশুর হিসাব নিয়েছে!সরকারের হিসাব সঠিক। চাহিদার চেয়ে অতিরিক্ত পশু থাকায় গতবারের চেয়ে এবার কোরবানির পশুর দাম ৫ শতাংশ পর্যন্ত কম থাকবে। সংগঠনটির সভাপতি মো. ইমরান হোসেন বলেন, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কোরবানির পশুর হিসাব কোন পদ্ধতিতে করে, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকলেও হিসাবটা যে একেবারে ভুল, তা নয়। এ থেকে একটা ধারণা পাওয়া যায়। বিগত বছরগুলোতেও আমরা এটা দেখেছি। সেই মোতাবেক দেশে এবার চাহিদার চেয়ে অনেক বেশি পশু রয়েছে। ফলে গতবারের চেয়ে দাম কম থাকার সম্ভাবনাই বেশি। যদিও খাবারের দাম বেড়েছে। এর পরও বেশি পশু থাকায় দাম কম থাকার সম্ভাবনা বেশি। এ জন্য এবার খামারিরা লোকসানের শঙ্কায় রয়েছেন।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় বিডিএফএ ইতোমধ্যেই দাম কমিয়েছে উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, লাইভ ওয়েটের ক্ষেত্রে আমরা ৪শ কেজির কম গরুর দাম ৫শ টাকা কেজি নির্ধারণ করেছি। গতবার এটি ছিল ৫২৫ টাকা।এদিকে বিডিএফএর এমন হিসাব মানতে নারাজ অন্য খামারিরা। তারা বলছেন, সরকারের কোরবানির পশুর হিসাব সঠিক নয়। উপরন্তু, এক বছরের ব্যবধানে গোখাদ্যের দাম ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ বেড়েছে। সেই সঙ্গে খামারের অন্যান্য খরচও বেড়েছে। বাড়তি এ ব্যয়ের প্রভাব পশুর দামেও পড়বে। রাজধানীসহ বেশ কয়েকটি জেলার খামারিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে ইতোমধ্যে তাদের খামারে পশু বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। যারা হাটে তুলে বিক্রি করবেন তারাও সব প্রস্তুতি সেরে নিচ্ছেন। প্রত্যেকেই বলছেন, গতবারের চেয়ে এবার বেশি দামে পশু বিক্রি করছেন।রাজধানীর সামারাই ক্যাটল ফার্ম লিমিটেডের ম্যানেজার মো. ইরফান হোসেন জানান, কোরবানিকে সামনে রেখে বিক্রি শুরু হয়ে গেছে। বুকিংও পাচ্ছি। বর্তমানে খামারে ৫০টির বেশি গরু রয়েছে। আরও কিছু আসবে। এর মধ্যে ২০টির মতো গরু বিক্রি হয়ে গেছে। এবার দাম ৩০ শতাংশ পর্যন্ত বেশি রয়েছে। গতবারের চেয়ে ছোট গরুতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা দাম বাড়তি রয়েছে। খাবারের দাম ৪০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি, অন্যান্য খরচও বেড়েছে। সুতরাং দাম বাড়াতে হয়েছে। কোরবানিতে বিক্রির জন্য এবার ৩০টির মতো গরু লালন-পালন করেছেন বগুড়ার আর কে অ্যাগ্রো অ্যান্ড ফিশারিজের উদ্যোক্তা মো. রাহাত খান। ইতোমধ্যে তার ৭টি গরু বিক্রি ও বুকিং হয়ে গিয়েছে,যেগুলোর দাম গতবারের চেয়ে ২০ হাজার টাকা করে বাড়তি বলে জানান তিনি। তরুণ এই উদ্যোক্তা বলেন, মূল্যস্ফীতির বাজারে গোখাদ্যের দাম অত্যধিক বাড়তি। এ ছাড়া খামারে বিদ্যুৎ বিলসহ অন্যান্য খরচ বেড়েছে। এর মধ্যে তাপপ্রবাহের সময় গরুগুলোর পেছনে বাড়তি খরচ করতে হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এ খরচ গরুর দামে প্রভাব ফেলেছে। ফলে দাম প্রায় ২০ শতাংশ বাড়তি রয়েছে।