নির্বিচারে ফিলিস্তিনিদের হত্যা বন্ধের দাবিতে আমেরিকার ৪৬টি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু আমেরিকা নয়, এ বিক্ষোভ এখন বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। ফ্রান্স, ব্রিটেন, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, কানাডা, জাপান, ইতালি, মেক্সিকো, লেবানন, বৈরুতসহ বিশ্বের বিভিন্ন শহরে এই বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা অবিলম্বে গাজায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধের দাবি জানাচ্ছেন। পাশাপাশি ইসরায়েল ও গাজা যুদ্ধকে সমর্থন করে, এমন সব কোম্পানির সঙ্গে সব ধরনের সম্পর্ক ছিন্ন করার দাবি তোলা হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজ ক্যাম্পাস থেকে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভকারীদের হটাতে যে দমন-পীড়ন চালানো হচ্ছে, তা মানুষকে প্রতিবাদে শামিল করতে উৎসাহিত করছে। অন্যদিকে ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি সামাল দিতে বিতর্কিত ভূমিকা নিয়েছে দেশটির প্রশাসন। এরই মধ্যে ২ হাজার ৪ শতাধিক বিক্ষোভকারীকে গ্রেফতার করেছে মার্কিন আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এসব আন্দোলনে ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরেছেন মার্কিন শিক্ষার্থীরা। এদিকে ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভ অব্যাহত থাকায় শিক্ষার্থী, আইনজীবী ও পরামর্শকেরা বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হওয়ার কথা জানিয়েছেন। তারা বলেন, টেক্সাস সরকার তাদের ধ্যানধারণা বদলাতে বাধ্য করছে ও সরকারের স্পষ্ট বৈরিতার শিকার হচ্ছেন তারা।
ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এ বছর স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠান ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। উত্তেজনার মধ্যেই ক্যাম্পাসগুলোতে স্নাতক সমাপনী অনুষ্ঠানের সময় হয়ে এসেছে। এসব আয়োজনে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা বাধা দিতে পারেন বলে আশঙ্কা করছে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর কর্তৃপক্ষ। প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী, ফ্রান্সের সবচেয়ে নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে অন্যতম প্যারিসের সায়েন্সেস পো বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি ভবনের চত্বরেও তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভকারীরা। এ ছাড়া লিডস, ব্রিস্টল ও ওয়ারউইক শহরের শিক্ষার্থীরাও তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভবনের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নিয়ে গাজা যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করছেন। একইভাবে অস্ট্রেলিয়ার অন্তত সাতটি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছেন যুদ্ধবিরোধী ফিলিস্তিনপন্থি বিক্ষোভকারীরা। গত শুক্রবার অস্ট্রেলিয়ার সিডনি বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁবু স্থাপন করে অবস্থান নিয়েছেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় যুক্তরাষ্ট্রের চলমান আন্দোলনের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছেন তারা। মেলবোর্ন, ক্যানবেরাসহ অস্ট্রেলিয়ার অন্যান্য শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও একই ধরনের তাঁবু গড়ে উঠেছে।
ভারতের খ্যাতনামা নয়াদিল্লির জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়েও (জেএনইউ) কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভকারীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভের আঁচ পড়েছে প্রতিবেশী কানাডার বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও। মন্ট্রিলের উপকণ্ঠে ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে তাঁবু টাঙিয়ে বিক্ষোভ করছেন ফিলিস্তিনপন্থি শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া টরন্টো এবং ভ্যাঙ্কুভারের ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়সহ আরও কয়েকটি ক্যাম্পাসে তাঁবু খাটিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেছেন শিক্ষার্থীরা। ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতি জানিয়ে যুক্তরাজ্যের কিছু বিশ্ববিদ্যালয়ে আগেই বিক্ষোভ করেছিল শিক্ষার্থীরা। তবে দিনকে দিন বৃহৎ আকার নিচ্ছে এই আন্দোলন। এরই মধ্যে বিভিন্ন ক্যাম্পাসে তাঁবু টাঙিয়ে অবস্থান নিয়েছে বিক্ষোভকারীরা। নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি ভবনের চত্বরেও অবস্থান নিয়েছে তারা। এ ছাড়া লিডস, ব্রিস্টল ও ওয়ারউইক শহরের শিক্ষার্থীরাও তাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভবনের বাইরে তাঁবু খাটিয়ে অবস্থান নিয়ে যুদ্ধবিরোধী বিক্ষোভ করছেন। জাপান, ইতালি, মেক্সিকো, লেবাননসহ বিশ্বের বহু দেশে শিক্ষার্থীরা গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যা ও আগ্রাসন বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করেছেন।