রমজানে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ ও অবৈধ মজুতদারির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকদের (ডিসি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বলা হয়েছে, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ স্বাভাবিক রাখতে জেলা প্রশাসন থেকে যে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হলে সে ব্যাপারে সরকারের সমর্থন থাকবে। বাজার তদারকি নিয়মিত চালিয়ে যেতে হবে। অতি মুনাফালোভী সিন্ডিকেটের কাছে নত হওয়া যাবে না। গতকাল রোববার শুরু হওয়া ডিসি সম্মেলনে এসব বার্তা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়েছে। ডিসিরাও পণ্যমূল্য স্বাভাবিক রাখতে প্রয়োজনীয় সবকিছু করা হবে বলে আশ্বস্ত করেছেন। এ ছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধি সংশোধন করে মোবাইল কোর্টের আওতা বাড়ানো এবং সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়নে ডিসিদের ক্ষমতা বাড়ানোর দাবি তাদের বক্তব্যে উঠে এসেছে।গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে চার দিনব্যাপী সম্মেলন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এতে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর এটাই প্রথম ডিসি সম্মেলন। মাঠ পর্যায়ের প্রশাসনে গতিশীলতা আনার লক্ষ্যে আয়োজিত সম্মেলনে ২৫টি কার্য অধিবেশনসহ মোট ৩০টি অধিবেশন হবে। এবারের সম্মেলনে ডিসিদের দেওয়া ৩৫৬টি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে।
উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ ছাড়া বক্তব্য দেন জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন এবং প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া। বিভাগীয় কমিশনারদের পক্ষে বক্তব্য দেন ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম এবং জেলা প্রশাসকদের পক্ষে বক্তব্য দেন চট্টগ্রামের আবুল বাশার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান ও গাইবান্ধার কাজী নাহিদ রসুল।বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের মন্ত্রী ও সচিব আলোচনায় যোগ দেবেন এবং ডিসিদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন। উদ্বোধন অনুষ্ঠানে স্থানীয় প্রশাসনের উদ্ভাবন, সেবা এবং সার্বিক উন্নয়নের ওপর একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শিত হয়। বিকেলে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাস্থ্য, শিক্ষা, সমাজকল্যাণ, যুব ও ক্রীড়া এবং নারী ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে ডিসিদের পৃথক অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়।
সম্মেলন উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন সফলভাবে সম্পন্ন করায় ডিসিদের ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, এই প্রথম আইনের মাধ্যমে গঠিত নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। নির্বাচন কমিশন অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে নির্বাচন পরিচালনা করেছে এবং কমিশনের নির্দেশনা অনুসরণ করে ডিসিরা সফলভাবে দায়িত্ব পালন করেছেন।প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের পর থেকে যত নির্বাচন আমি দেখেছি, প্রত্যক্ষভাবে এবং নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে দেখেছি কীভাবে জনগণের ভোটের অধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলা হয়েছে। এবারের নির্বাচন আমি মনে করি সবচেয়ে সুষ্ঠু , অবাধ-নিরপেক্ষ হয়েছে।তিনি বলেন, প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচন চায়নি; তাদের লক্ষ্য ছিল এ দেশে যেন কোনো নির্বাচনই না হয়। অস্বাভাবিক পরিস্থিতি যেন আবার সৃষ্টি হয়। নির্বাচনে সাধারণ মানুষ, একদম গ্রাম পর্যায় পর্যন্ত নারী এবং প্রথমবার যারা ভোটার, তাদের আগ্রহ সবচেয়ে বেশি ছিল। তারা যে সুষ্ঠুভাবে ভোট দিতে পেরেছে, এর কৃতিত্ব ডিসিদের।