NEWSTV24
চরম ঝুঁকিতে ৭০ ভাগ বেজমেন্ট
শনিবার, ১১ মার্চ ২০২৩ ১৬:৫৪ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

রাজধানীর পুরান ঢাকার ভবনগুলোর বেজমেন্টের ৭০ শতাংশ রয়েছে মারাত্মক ঝুঁকির মধ্যে। গাড়ি পার্কিংয়ের জন্য নির্ধারিত থাকলেও ব্যবহৃত হচ্ছে অন্য কাজে। বেজমেন্টে গড়ে তোলা হয়েছে প্লাস্টিকের গোডাউন, দোকানপাট, দাহ্য পদার্থের কারখানা ইত্যাদি। আছে বয়লারও। আবার কোথাও রয়েছে খাবার হোটেল। গ্যাসের সিলিন্ডারে বা অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিয়ে আগুন জ্বালানো হচ্ছে। এসব কারণে বেজমেন্টগুলো নগরবাসীর জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠেছে।এসব বেজমেন্ট থেকে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। কিছু বেজমেন্টের অবস্থা এত বাজে যে তাতে কী জিনিসপত্র আছে, তাও বোঝার উপায় নেই। বিভিন্ন ধরনের তার-পাইপ জড়িয়ে-পেঁচিয়ে জঞ্জালে পরিণত হয়েছে কিছু বেজমেন্ট।ভবনগুলোর তদারককারী সংস্থা রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কখনও বেজমেন্টের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। তাই আজ এ অবস্থা। অথচ প্রায় সব ভবন মালিকই বিত্তশালী। তারপরও বেজমেন্টগুলো তাঁরা ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ব্যবহার করছেন। একজন সংসদ সদস্যের ভবনের বেজমেন্টও এ তালিকায় রয়েছে। সেটা গোডাউন হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

সিদ্দিকবাজারের ক্যাফে কুইন ভবনের বেজমেন্টে ভয়াবহ বিস্ফোরণের পর রাজউক নড়েচড়ে বসেছে। রাজউকের অঞ্চলগুলোর প্রত্যেক পরিচালককে আহ্বায়ক করে আটটি কমিটি করা হয়েছে বৃহস্পতিবার। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অথরাইজড অফিসার, ইমারত পরিদর্শক, প্রধান ইমারত পরিদর্শক ও সহকারী অথরাইজ অফিসারকে কমিটির সদস্য করা হয়েছে। শুক্র ও শনিবারের ছুটিও বাতিল করে সংশ্লিষ্টদের ১৫ মার্চের মধ্যে বেজমেন্টগুলো ব্যবহারের চিত্র সম্পর্কে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিটি অঞ্চল থেকে তিনটি টিম করে শুক্রবার কাজ শুরু হয়েছে।৭ নম্বর অঞ্চলের (পুরান ঢাকা) অথরাইজড অফিসার মাকিদ এহসান সমকালকে জানান, প্রথম দিন তাঁরা ৫৪টি ভবনের বেজমেন্ট পরিদর্শন করেছেন। কিন্তু অবস্থা খুবই নাজুক। প্রায় ৭০ শতাংশ ভবনের বেজমেন্টের অবস্থা ভালো না। পার্কিং ছাড়া কারখানা-গোডাউন-হোটেল বা অন্য কাজে বেজমেন্ট ব্যবহৃত হলে তা ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুরান ঢাকায় এই চিত্রটা খুবই ভয়ংকর।

তিনি জানান, বংশাল এলাকার ২০টি ভবনের মধ্যে মাত্র একটির বেজমেন্টের সঠিক ব্যবহার পাওয়া গেছে। অনেকে নকশা দেখাতে পারেননি। অনেকে কথাও বলতে চাইছেন না। অনেক মালিককে ভবনে পাওয়া যায়নি।রাজউকের বোর্ড সদস্য (উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস বলেন, মালিকরা বেজমেন্টভিত্তিক কী ধরনের ব্যবসা পরিচালনা করেন, তাঁদের অনুমোদন আছে কিনা, সেগুলো চিহ্নিত করার কাজ শুরু হয়েছে। আটটি অঞ্চলে ২৪টি টিম কাজ করছে। প্রথম দিন কতগুলো বেজমেন্ট পরিদর্শন করল, একদিন পর রিপোর্ট পাওয়া যাবে। তবে পুরান ঢাকার অবস্থা ভালো নয়।আজ শনিবার নগর-সংক্রান্ত সর্বোচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন নগর উন্নয়ন কমিটির মিটিং ডাকা হয়েছে। এই কমিটির সদস্য সচিব রাজউক চেয়ারম্যান ও আহ্বায়ক পূর্ত সচিব। এ ছাড়া বুয়েট, স্থাপত্য অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কারিগরি জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিত্বরা রয়েছেন। কমিটির মিটিং থেকে পাওয়া সুপারিশ অনুযায়ী পরে রাজউক ওইসব ভবনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে।