NEWSTV24
দুর্ভোগের নাম বিআরটি
বুধবার, ১৭ আগস্ট ২০২২ ১৫:৪১ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

দেশের ব্যস্ততম সড়কে যানজটের দুর্ভোগ নিরসনে নেওয়া বাস র;্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটি) প্রকল্পই এখন ভোগাচ্ছে। নিরাপত্তা, ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা ঠিক রাখতে চীনা ঠিকাদারদের বারবার তাগিদ দিয়ে লাভ হয়নি। এতে চরম দুর্ভোগ ও প্রাণহানি হলেও প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সরকারি সংস্থা শাস্তি দেয়নি টাকার সংকটে কাজ করতে না পারা ঠিকাদারদের। ফলে ২০১২ সালের এই প্রকল্পের ব্যয় আড়াই গুণ এবং সময় তিন দফা বাড়িয়েও কাজ শেষ হয়নি।আগামী ডিসেম্বরেও চালু হবে না বিআরটি। অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা হিসেবে আগামী জুলাইয়ে বিআরটিসির বাস উল্টো পথে চালিয়ে যাত্রী পরিবহনের চিন্তা করা হচ্ছে। বিশেষায়িত ইলেকট্রিক বাস কেনার দরপত্র হয়নি। বাস কিনতে ঋণ দেবে ফ্রান্সের এজেন্সিস ফ্রান্সি ডি ডেভেলপমেন্ট (এএফডি)। তাদের শর্তের বেড়াজাল পেরিয়ে আগামী দুই বছরের আগে বাস পাওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। যানজট নিরসনে ২০০৪ সালের কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনায় (এসটিপি) ঢাকায় তিনটি বিআরটি ও তিনটি মেট্রোরেল লাইন নির্মাণের সুপারিশ করা হয়। গাজীপুরের জয়দেবপুর থেকে চৌরাস্তা, টঙ্গী, উত্তরা, বিমানবন্দর, বনানী, মহাখালী, কাকরাইল, পল্টন, পুরান ঢাকা হয়ে কেরানীগঞ্জের ঝিলমিল পর্যন্ত ৪১ কিলোমিটার বিআরটি লাইন-৩ নির্মাণ প্রকল্প ২০১২ সালে অনুমোদন পায়। কিন্তু অর্থায়ন জটিলতায় প্রথম ধাপে জয়দেবপুর থেকে বিমানবন্দর সাড়ে ২০ কিলোমিটার বিআরটি নির্মাণের সিদ্ধান্ত হয়। ২ হাজার ৩৯ কোটি টাকায় ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে কাজ শেষের পরিকল্পনা ছিল।বিআরটি পদ্ধতিতে সড়কের মাঝবরাবর বাসের জন্য পৃথক লেন থাকে। যেখানে সড়ক সরু, সেখানে বাসের লেন থাকে ফ্লাইওভারে। বিআরটি লেনে সিগন্যাল ছাড়াই ট্রেনের মতো বিনা বাধায় চলে বাস। অন্য কোনো যানবাহন বিআরটি লেনে চলতে পারে না।

জয়দেবপুর-বিমানবন্দর পর্যন্ত সাড়ে ২০ কিলোমিটার বিআরটি লেনের সাড়ে চার কিলোমিটার থাকবে ভায়াডাক্টের (উড়াল অংশ) ওপর। বাকি ১৭ কিলোমিটার রাস্তার ওপর। নির্মাণ করা হচ্ছে ১০ লেনের টঙ্গী সেতু। যাত্রী ওঠানামায় রাস্তায় থাকবে ২৫টি স্টেশন।প্রকল্প অনুমোদনের পাঁচ বছর পর পূর্ণাঙ্গ নকশা ছাড়াই ২০১৭ সালে বিআরটির কাজই শুরু হয়। ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬৮ কোটি টাকা। তবে প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৩ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়িয়ে ব্যয় ৪ হাজার ৫৩৬ কোটি টাকা করে ডিপিপি দ্বিতীয়বারের মতো সংশোধনের কাজ চলছে। প্রতি কিলোমিটারে ২২১ কোটি টাকা খরচ হচ্ছে। ঢাকার বিআরটি পৃথিবীতে সবচেয়ে ব্যয়বহুল।বিআরটি নির্মাণ ও পরিচালনায় স্বতন্ত্র ঢাকা বিআরটি লিমিটেড নামে সরকারি কোম্পানি গঠন করেছে সরকার। এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. সফিকুল ইসলাম বলেছেন, আগামী মার্চের মধ্যে বিআরটি অবকাঠামো নির্মাণ সম্পন্ন হবে। জুলাইয়ে বাস চলবে।বিআরটি লেনে চালানোর জন্য ১০৩টি বিশেষায়িত ইলেকট্রিক বাস কেনা হবে এএফডির ঋণে। মাহবুবুল বারী জানিয়েছেন, এক বছর বাসে স্পেসিফিকেশন তৈরি করে দিয়েছেন। বিআরটি লেনে বাস নিয়ন্ত্রণে কিনতে হবে ইন্টেলিজেন্ট ট্রাফিক সিস্টেম (আইটিএস)। বাস ও আইটিএস এখন প্রকল্পের মূল চ্যালেঞ্জ আন্তর্জাতিক দরপত্রে এগুলো কিনতে অনেক সময় লাগবে।বিআরটি লেনে রাস্তার মাঝে স্টেশন থাকবে। ফলে যাত্রী ওঠানামায় বাসের ডান পাশে দরজা থাকতে হবে। বিশেষায়িত বাস না পাওয়া পর্যন্ত বিআরটি লেনে বিআরটিসির বাস উল্টো পথে চালানো হবে। ফলে বাসের দরজা স্টেশনমুখী হবে। যাত্রীরা ডান পাশ দিয়ে নামতে পারবেন।