NEWSTV24
শক্তি বাড়াচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’, সাগরে ২ নম্বর
সোমবার, ০৯ মে ২০২২ ১৪:৪৯ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত গভীর নিম্নচাপটি উত্তর-পশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিয়েছে। আগেই নির্ধারিত নামানুসারে যাকে বলা হচ্ছে অশনি। দ্রুত শক্তি বাড়িয়ে ঘূর্ণিঝড়টি ঘণ্টায় ১৫ থেকে ২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে ভারতের অন্ধ্র ও উড়িষ্যা উপকূলের দিকে এগোচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তর তাই নিয়মিতভাবে এর গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছে। সাগর উত্তাল থাকায় দেশের প্রধান তিন বন্দর চট্টগ্রাম, পায়রা ও মোংলা এবং কক্সবাজার উপকূলকে ২ নম্বর হুশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে। বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত নৌযানগুলোকে দেওয়া হয়েছে সাবধানে ও উপকূলের কাছাকাছি চলাচল করার পরামর্শ।আবহাওয়া অধিদপ্তরের উপপরিচালক ছানাউল হক ম-ল বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি দ্রুত শক্তি অর্জন করছে। তবে এর গতিপথ এখন পর্যন্ত ভারতের অন্ধ্র ও উড়িষ্যা উপকূলের দিকে আছে। অবশ্য এটি গতি বদলে যে কোনো সময় বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গ উপকূলের দিকেও আসতে পারে। যে কারণে আমরা নিবিড়ভাবে ঘূর্ণিঝড়টির গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করছি।আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় অশনি রবিবার দুপুরের দিকে পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৪৫ কিলোমিটার দক্ষিণে, চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ২০৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১২৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে এবং মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ১ হাজার ১৮৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণ পশ্চিমে অবস্থান করছিল। ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর বিক্ষুব্ধ রয়েছে। তাই চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরগুলোকে ২ নম্বর দূরবর্তী হুশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।

এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে। এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে হালকা বৃষ্টি হলেও তা অল্প সময়ের জন্য স্থায়ী ছিল। ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের উপকূলের কাছাকাছি আসার আগ পর্যন্ত আগামী কয়েক দিন গরমের তীব্রতা বাড়তে পারে।ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের কৃত্রিম ভূ-উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে, ঘূর্ণিঝড়টির বাতাসের গতিবেগ উঠেছে ঘণ্টায় প্রায় ১২০ কিলোমিটার, যা দমকা হাওয়াসহ ঘণ্টায় প্রায় ১৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ১২ ঘণ্টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি আরও শক্তিশালী হওয়ার পূর্বাভাস দিচ্ছে আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেলগুলো।

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান বলেন, আবহাওয়াবিদ এবং আন্তর্জাতিক আবহাওয়া অফিস ধারণা করছে, ঘূর্ণিঝড়টি ১২ মে সকালে ভারতের বিশাখাপতনম, ভুবনেশ্বর, পশ্চিমবঙ্গ স্পর্শ করে দুর্বল হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হবে। বাংলাদেশে আঘাত হানার সম্ভাবনা এখন পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তবে অশনির প্রভাবে বাংলাদেশে ঝড়-বৃষ্টি হবে। জলোচ্ছ্বাস হওয়ার শঙ্কা নেই। গতকাল সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি অবশ্য এও বলেন, ঘূর্ণিঝড় যে কোনো সময় যে কোনো দিকে মোড় নিতে পারে। এখন এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে ধাবিত হচ্ছে। এটি যদি মোড় নিয়ে উত্তর দিকে ধাবিত হয়, তা হলে আমাদের দেশের সাতক্ষীরা, খুলনা, বরিশাল ও পটুয়াখালীতে আঘাত হানতে পারে।ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী বলেন, আমরা সবাইকে নিয়ে সভা করেছি, তাদের সচেতন করে দেওয়া হয়েছে। মাঠে নেমেছে সিপিপি স্বেচ্ছাসেবকরা। তারা ঘূর্ণিঝড়ের সতর্কবার্তা প্রচার করছে। আমরা আশ্রয় কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করার নির্দেশনা দিয়েছি। সেগুলোর প্রস্তুতি প্রায় শেষ। সেখানে রান্না করা খাবার দেওয়ার জন্য চাল ও অর্থ দিয়েছি। মোটামুটি প্রস্তুতি আছে। করোনার কারণে আশ্রয় কেন্দ্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে মানুষকে আশ্রয় দেওয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছি।