ইউক্রেনে রুশ আক্রমণ ঘিরে চলমান উত্তেজনার মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বারবার বলে আসছে, আক্রমণ করলে রাশিয়ার ওপর এমন নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে, যা এর আগে কখনো দেখা যায়নি; কিন্তু তাই বলে খোদ রুশ প্রেসিডেন্টের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা আসছে? গতকাল বুধবার সংবাদমাধ্যম বিবিসি এমনই ইঙ্গিত দিয়েছে।খবরে বলা হয়, রাশিয়া যদি ইউক্রেন আক্রমণ করে তা হলে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি বিবেচনা করবেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। একটি সংবাদ সম্মেলনে বাইডেন এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।সংশ্লিষ্ট প্রশ্নের জবাবে বাইডেন বলেন, রাশিয়া যদি দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্তে থাকা দেশটির দিকে হাত বাড়ায়, তবে তা বিশ্বের জন্য এর পরিণতি হবে ভয়াবহ, যা দ্বিতীয় বিশ্বেযুদ্ধের পর এমনটি আর হয়নি।এদিকে গতকাল বুধবার বাইডেনের সুরের প্রতিধ্বনি তুলে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রুস বলেন, কোনো কিছুই উড়িয়ে দেওয়া যায় না, এমনকি রুশ প্রেসিডেন্টের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে।তিনি আরও বলেন, যেটি গুরুত্বপূর্ণ সেটি হলো আমাদের মিত্ররাও একই কাজ করবে। এটি হবে ঐক্যবদ্ধভাবে। পুতিনকে আমরা দেখিয়ে দেব যে, আমরা কতোটা এক হতে পারি।
প্রসঙ্গত ইউক্রেন সীমান্তে রাশিয়া প্রায় এক লাখ সেনা মোতায়েন করেছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পশ্চিমারা বলছে, এসব সেনা যে কোনো সময় ইউক্রেন আক্রমণ করতে পারে।অন্যদিকে রাশিয়া বলছে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট ন্যাটো আমাদের নাকের ডগায় বসে কী করছে? এমনকি আমাদের সীমান্তে তারা মহড়া চালাচ্ছে। এই অঞ্চলে ন্যাটোর এই বিস্তার সহ্য করা হবে না।এদিকে এমন পরিস্থিতির মধ্যে সম্প্রতি কিয়েভ থেকে পশ্চিমারা দূতাবাসকর্মীদের সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। এ কারণে উদ্বেগ আরও বাড়ছে। তবে পুতিনের ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে বিবিসির বিশ্লেষক জেমস ল্যানডেল বলেছেন, পশ্চিমা দেশগুলোর পক্ষ থেকে কোনো দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের বিষয়টি নজিরবিহীন নয়।অতীতে দেখা গেছে জিম্বাবুয়ের প্রেসিডেন্ট বরাটা মুগাবে, সিরিয়ার বাশার আল-আসাদ ও লিবিয়ার মুয়াম্মার গাদ্দাফির ওপর পশ্চিমারা নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে। তবে একটি অঞ্চলের রাষ্ট্রপ্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি আলাদা। সব কিছুর পরও জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সদস্যরাষ্ট্রের প্রধানের ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়টি সহজ হবে না।এদিকে ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা বলেছেন, তার দেশ রাশিয়াকে কোনো ছাড় দেবে না। সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এমন মন্তব্য করেন তিনি।কুলেবা বলেন, উত্তেজনা প্রশমনের প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে ইউক্রেনের ওপর ছাড় চাপিয়ে দেওয়ার কোনো সুযোগ কাউকে দেওয়া হবে না। কিয়েভ এটা মেনে নেবে না।