শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সশরীরে পাঠদান বন্ধ। বিকল্প উপায় অনলাইনে পাঠদান। এবার অনলাইন ক্লাসের ওপর শিক্ষা প্রশাসনের মনিটরিং জোরদার করা হবে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোয় নিয়মিত অনলাইন ক্লাসের তথ্য নেবে শিক্ষা অধিদপ্তর। সম্প্রতি করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ায় সরকার দুই সপ্তাহের জন্য সব ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে। ২১ জানুয়ারি থেকে ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এ ছুটি। শিক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে এ সময় আগের মতো অনলাইন ক্লাস চালু থাকবে।মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক (রুটিন দায়িত্ব) অধ্যাপক শাহেদুল খবির চৌধুরী বলেন, করোনা সংক্রমণের কারণে আমরা সশরীরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাস পরীক্ষা নিতে পারছি না। এখন ছেলেমেয়েদের বিকল্প উপায়ে লেখাপড়া চালিয়ে নিতে হবে। সরকার অনলাইন পদ্ধতিতে লেখাপড়া চালিয়ে রেখেছে গত দুই বছর। টেলিভিশনে ক্লাস সম্প্রচার করা হয়েছে। ইন্টারনেটভিত্তিক ক্লাসরুমে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ক্লাস পরিচালনা করা হচ্ছে। শিক্ষা প্রশাসন থেকে এবার অনলাইন ক্লাসের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিনের ক্লাস কার্যক্রম মনিটরিং জোরদার করা হবে। নিয়মিত অনলাইন ক্লাসের তথ্য নেবে শিক্ষা অধিদপ্তর। অনলাইন ক্লাসে সরকারের মনিটরিংয়ে দাবি জানিয়েছেন অভিভাবকরা। অভিভাবক ঐক্য ফোরামের সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু বলেন,
স্কুলে সশরীরে উপস্থিত থেকে ছেলেমেয়েরা যে পাঠ পেয়েছে, এর বিকল্প অনলাইন হতে পারে না। তবুও আপৎকালীন একটা বিকল্প পথে লেখাপড়া চালিয়ে নেওয়া। কিন্তু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো যথাযথভাবে অনলাইন ক্লাস পরিচালনা করছে কিনা এ জন্য মাউশির মনিটরিং দরকার। শহরের শিক্ষার্থীরা ইন্টারনেট, টিভির ক্লাস যতটা পাওয়ার সুযোগ আছে সেটি গ্রামে নেই। এখন সরকার কীভাবে গ্রামের শিক্ষার্থীদের অনলাইন ক্লাসে অংশগ্রহণ নিশ্চিত করবে? এ বিষয়ে একটি পথ বের করতে হবে। ইন্টারনেট, মোবাইল, ল্যাপটপ কেনার সামর্থ্য দরিদ্র অনেক শিক্ষার্থীর নেই। লেখাপড়ায় তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত না করতে পারলে আবারও বিপুলসংখ্যক শিক্ষার্থী ঝরে যাবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে।গত দুই বছরের অনলাইন ক্লাসে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণের হার আশানুরূপ নয়। করোনাকালে অনলাইন ক্লাস চালু হলেও সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো পর্যাপ্ত শিক্ষার্থী টানতে পারেনি। মাউশির তদারক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মাধ্যমিক স্কুলগুলোর ৫৭ শতাংশ শিক্ষার্থী অনলাইন ক্লাসে অংশ নেয়নি। শিক্ষার্থীদের আকর্ষণ করতে পারেনি টেলিভিশনে প্রচারিত ক্লাসও। ৭৯ শতাংশ শিক্ষার্থী এসব ক্লাসে আগ্রহ দেখায়নি। ২৯ শতাংশ বিদ্যালয় অনলাইন ক্লাসের উপস্থিতির তথ্য সংরক্ষণ করেনি। সময়সূচি মেনে ক্লাস নিয়েছে ৮১ শতাংশ বিদ্যালয়।