গত সপ্তাহে কয়েকটি বিতরণ সংস্থা গ্যাসের দাম ১১৭ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসির কাছে। বিতরণ সংস্থাগুলোর আবাসিক ও বাণিজ্যিক-সব ধরনের গ্যাসের দাম প্রায় দ্বিগুণ বাড়ানোর এই প্রস্তাবে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন-বিইআরসি।গত সপ্তাহে তিতাস, বাখরাবাদ ও পশ্চিমাঞ্চল গ্যাস কোম্পানি আবাসিকের ক্ষেত্রে দুই চুলায় ৯৭৫ থেকে বাড়িয়ে ২ হাজার ১০০ টাকা, মিটার আছে এমন চুলায় প্রতি ঘনমিটার ১২ টাকা, বিদ্যুৎ ও সার উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাসের দাম ঘনমিটার প্রতি ৪ টাকা ৪৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৯ টাকা ৬৬ পয়সা, শিল্প খাতে ১০ টাকা ৭০ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ২৩ টাকা ২৪ পয়সা, ক্যাপটিভে (শিল্পকারখানায় নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহৃত গ্যাস) ১৩ টাকা ৮৫ পয়সার স্থলে ৩০ টাকা, যানবাহনে ব্যবহার করা গ্যাসের দাম ৩৫ টাকা থেকে ৭৬ টাকা ৪৮ পয়সা করার প্রস্তাব দেয়া হয়।নভেম্বরে ডিজেলের দাম এক লাফে ১৫ টাকা বাড়ানো হয়। গ্যাসের দাম বাড়লে বিদ্যুতের দাম ছাড়াও সারসহ নানা পণ্যের দাম ও সিএনজিচালিত পরিবহনের ভাড়া আবার বেড়ে মানুষের ব্যয় বাড়িয়ে দিত।জ্বালানির দাম বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিইআরসির ভূমিকা রয়েছে।
উৎপাদক ও বিতরণ সংস্থাগুলো এর কাছে প্রস্তাব রাখার পর তারা সেগুলো পরীক্ষা নিরীক্ষা করার পাশাপাশি ভোক্তা প্রতিনিধিসহ গণশুনানির আয়োজন করে। এরপর তারা একটি সিদ্ধান্ত নেয়। সরকার সেই অনুযায়ী আদেশ জারি করে।বিইআরসি মনে করছে, গ্যাসের দাম বাড়ানোর এই প্রস্তাব বিধিসম্মত হয়নি। তাই সেগুলো আপাতত গ্রহণ করা হয়নি। গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব আপাতত ফেরানো হলেও অদূর ভবিষ্যতে কী হবে, সেটা এখনই বলা যাচ্ছে না।দেশে এখন গ্যাসের চাহিদা দৈনিক ৪২০ কোটি ঘনফুট। তবে উৎপাদন করা হয় প্রায় ৩০০ কোটি ঘনফুট। এর মধ্যে ১০০ কোটি ঘনফুট গ্যাস এলএনজি আকারে বিদেশ থেকে আমদানি করা হয়।বছরখানেক আগে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি ঘনফুট এলএনজির দাম ১০ ডলারের আশেপাশে থাকলেও এখন আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যাপকহারে বেড়েছে। প্রতি ঘনমিটার এলএনজি আমদানি ব্যয় বাবদ খরচ হচ্ছে ৫০ টাকা ৩৮ পয়সা। বিপরীতে দেশে প্রতি ঘনমিটার গ্যাস বিক্রি হচ্ছে ৯ টাকা ৩৬ পয়সা।