টানা তিনদিন বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা।বৈশ্বিক বায়ুর মান পর্যবেক্ষণকারী সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আইকিউ এয়ারের প্রতিবেদন অনুযায়ী, শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিশ্বের ১০০টি প্রধান শহরের মধ্যে বায়ুদূষণের দিক থেকে ঢাকা এক নম্বরে ছিল।দূষণের তালিকায় শীর্ষস্থানে ঢাকার সঙ্গে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি, ইউরোপের দেশ মেসিডোনিয়ার রাজধানী স্কোপিয়ে, মঙ্গোলিয়ার উলানবাটর।একিউআই অনুযায়ী, শুক্রবার সকালে ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৮৯। এ সময় দিল্লি, স্কোপিয়ে ও উলাটবাটরের বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল যথাক্রমে ১৯৬, ১৯৫, ১৯২।বায়ুমানের সূচক ২০০ অতিক্রম করলে একে খুব অস্বাস্থ্যকর বলে ধরা হয়। একিউআই অনুযায়ী, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় ঢাকায় বায়ুদূষণের মাত্রা ছিল ২৪১; যা বুধবার সকাল ১০টায় ২৬৯ রেকর্ড করা হয়। বুধবারও ঢাকার বাতাসের মান অস্বাস্থ্যকর ছিল। সেদিন বায়ুর মানের সূচক ছিল ২৬৯।টানা তিনদিন বিশ্বের ১০০টি শহরের মধ্যে বায়ুদূষণে শীর্ষে রয়েছে ঢাকা। আইকিউ এয়ারের শুক্রবারের প্রতিবেদন
পরিবেশ অধিদপ্তরের নির্মল বায়ু ও টেকসই উন্নয়ন প্রকল্পের বাতাসের মান পর্যবেক্ষণকেন্দ্রের প্রতিবেদনে দেখা গেছে, রাজধানীর বায়ু ২০১৪ সালে ১৬৫ দিন বিপজ্জনক ছিল। ২০১৫ সালে দূষণের মাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ১৭৮ দিনে।পর্যায়ক্রমে ২০১৬ সালে ১৯২ দিন, ২০১৭ সালে ২১২ দিন, ২০১৮ সালে ২৩৬ দিন, ২০১৯ সালে ২৮৩ দিন ঢাকার বায়ু দূষিত ছিল, যার ধারাবাহিকতায় ২০২০ ও ২০২১ সালে বায়ুদূষণের তালিকায় প্রথম হয় বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা।স্টামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ুমণ্ডলীয় দূষণ অধ্যয়ন কেন্দ্রের (ক্যাপস) পরিচালক ড. আহ্মদ কামরুজ্জামান মজুমদার সমকালকে বলেন, শীত শুরুর পর থেকেই ঢাকার বায়ুমান কখনও চরম অস্বাস্থ্যকর এবং কখনো বিপজ্জনক পর্যায়ে গেছে। এমন পরিস্থিতিতে বিশ্বের অন্যান্য শহরে জরুরি অবস্থা জারি করা হয়। ওইসব দেশে হেলথ এলার্ট দিয়ে স্কুল-কলেজ বন্ধ রাখা, বিশেষ করে শিশু ও বয়স্কদের বাইরে যাওয়ার জন্য নিষেধ করা হয়। এছাড়া বায়ুদূষণ দূর করতে বেশকিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কিন্তু ঢাকা টানা তিনদিন বায়ুদূষণে শীর্ষে থাকার পরও সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কোনো উদ্যোগ নেই। বায়ুদূষণে স্বাস্থ্য বিপর্যয় ঠেকাতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কোনো কার্যক্রম নেই।তিনি বলেন, দুই কারণে ঢাকার বায়ু বেশি দূষিত। প্রথমটি হচ্ছে বাতাসের দূষিত উপাদান বাতাসেই রয়ে যাচ্ছে। শহরে বড় প্রকল্পের কাজ, নির্মাণাধীন ভবনের কাজ, যানবাহনের ধোঁয়ায় ঢাকার বায়ুর চাপ বেশি। এই দূষিত অংশ বায়ুর নিম্নস্তরে ২০০-৩০০ ফুট ওপরে অবস্থান করছে। ফলে বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে এখনই জরুরি পদক্ষেপ নিতে হবে।