সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি যেসব অঞ্চলেবিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: সংশোধিত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৪৬ হাজারসকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
No icon

কিন্ডারগার্টেনের কোটি শিক্ষার্থীর কী হবে?

রাজধানীর ইব্রাহীমপুরের ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেনের দ্বিতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. জামিল। গত মার্চ মাসের পর জামিলের পড়ালেখা একপ্রকার বন্ধই রয়েছে। প্রথম দিকে স্কুল থেকে বেতনের জন্য দু-চারবার ফোন দিলেও এখন আর কোনো যোগাযোগ নেই। এমনকি টিভিতে প্রচারিত ক্লাসও দেখছে না। এখন বাবার সঙ্গে মুদি দোকানেই ওর বেশির ভাগ সময় কাটে।জামিলের বাবা মো. আসাদ বলেন,আমি নিজে তেমন পড়ালেখা জানি না। আমার স্ত্রীও জানে না। সে জন্যই ছেলেকে সরকারি স্কুলে না দিয়ে কিন্ডারগার্টেনে দিয়েছি, যাতে ভালো করে পড়ালেখা শিখতে পারে। কিন্তু স্কুল বন্ধের পর থেকে ছেলের পড়ালেখাও বন্ধ হয়ে গেছে। এখন দেখি কবে আবার স্কুল খোলে।দেশের প্রায় ৬০ হাজার কিন্ডারগার্টেন স্কুলের প্রায় এক কোটি শিক্ষার্থীর বেশির ভাগের অবস্থা একই। বিশেষ করে নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের শিশুরা পুরোপুরিই পড়ালেখার বাইরে চলে গেছে। স্কুল থেকেও তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। সরকারের পক্ষ থেকেও তাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ নেই। এমনকি অনেক স্কুলও বন্ধ হয়ে গেছে। ফলে এসব স্কুলের শিশুরা কোন স্কুলে পড়ে সেটাও তাদের বলার সুযোগ নেই।

প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. আকরাম-আল হোসেন বলেন, যেসব কিন্ডারগার্টেন এরই মধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে, তাদের শিক্ষার্থীরা বা যেসব অভিভাবক গ্রামে চলে গেছেন তাঁরা তাঁদের সন্তানদের কাছাকাছি সরকারি স্কুলে টিসি ছাড়া ভর্তি করাতে পারবেন। এ ব্যাপারে আমরা এরই মধ্যে সার্কুলার জারি করেছি। আমরা চাই, সব শিক্ষার্থীই সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চলে আসুক। আমাদের স্কুলগুলোর সেই ক্যাপাসিটি আছে।কিন্ডারগার্টেন অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য মতে, এরই মধ্যে দেশের এক হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে গেছে। আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে স্কুল না খুললে আরো প্রায় ২০ হাজার কিন্ডারগার্টেন বন্ধ হয়ে যাবে। তবে অনেকেই স্কুল বিক্রির নোটিশ দিলেও সেখানে কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি। কিন্ডারগার্টেনের ১০ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীর বেশির ভাগই পেশা পরিবর্তন করেছেন। কেউ কেউ ছোটখাটো নানা কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছেন। আবার কেউ গ্রামে ফিরে গেছেন।এরই মধ্যে জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি), প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী (পিইসি) ও এইচএসসি পরীক্ষা চলতি বছর না নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। স্কুলগুলোর বার্ষিক পরীক্ষাও চলতি বছর নেওয়া হবে না। এতে কিন্ডারগার্টেন স্কুলগুলো আরো বেশি সমস্যায় পড়ছে। কারণ এসব স্কুলে যেহেতু নিম্নবিত্ত ও দরিদ্র পরিবারের সন্তানরা বেশি পড়ে, তাই পরীক্ষা না হলে কেউ আর টিউশন ফি দেবে না। আবার পরবর্তী সময়ে যখনই স্কুল খুলুক না কেন, অনেকেই টিউশন ফি দেওয়ার ভয়ে অন্য স্কুলে চলে যাবে।