ব্যাংক আলফালাহর ব্যবসা অধিগ্রহণ করবে ব্যাংক এশিয়াআজ এক ঘণ্টা বন্ধ থাকবে ইন্টারনেট সেবাথাইল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রীআনাড়ি হাতে ২০ টন ট্রাক, ফের সড়কে ঝরল ১৪ প্রাণইরানের বিরুদ্ধে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে যুক্তরাষ্ট্র
No icon

মাসে মাসে নির্ধারণের প্রস্তাব এলপিজির দাম

আন্তর্জাতিক বাজারে ওঠানামার বিষয়টি বিবেচনায় রেখে তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস বা এলপিজির দাম মাসে মাসে নির্ধারণের সুযোগ তৈরির সুপারিশ করেছে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি) কারিগরি কমিটি। গতকাল ঢাকার বিয়াম মিলনায়তনে প্রথমবারের মতো এলপিজির মূল্যহার নির্ধারণ ও দামে শৃঙ্খলা আনতে আয়োজন করা শুনানিতে এ প্রস্তাব করা হয়। তবে এর আইন ও নীতিগত ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে ভোক্তা অধিকার সংগঠন কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ-ক্যাব।আদালতের আদেশ পালন করতে গিয়ে এলপিজির দাম নির্ধারণের এই উদ্যোগে এখনই মাসে মাসে দাম নির্ধারণের নিয়ম চালুর প্রয়োজন আছে কিনা, তা পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক এম শামসুল আলম। শুনানিতে তিনি বলেন, মাসে মাসে মূল্যবৃদ্ধির এই প্রস্তাব বিইআরসি আইনের সম্পূর্ণ লঙ্ঘন।এদিকে সরকারি এলপিজি গ্যাসের দাম বেশি রাখার সুপারিশ করে বিইআরসি। তবে এর সঙ্গে দ্বিমত করেন সরকারি এলপি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান। ১২ কেজি সরকারি এলপি গ্যাসের বোতল ৯০২ টাকা রাখার সুপারিশ করা হয়েছে। তবে এমডি বলছেন প্রস্তাবিত ৭০০ টাকা রাখলেই ভালো হয়।বিইআরসি মূল্যায়ন কমিটি সরকারি-বেসরকারি কোম্পানিগুলোর এলপিজির কেজিপ্রতি আলাদা আলাদা দাম নির্ধারণের সুপারিশ করেছে। এ ক্ষেত্রে প্রতিকেজি এলপিজির দাম ৭২ টাকা নির্ধারণের সুপারিশ করে কমিটি।

প্রতিকেজি এলপিজির দাম ৭২ টাকা সুপারিশ করা হলেও সরকারি কোম্পানির সাড়ে ১২ কেজি এলপিজি সিলিন্ডারের দাম সুপারিশ করা হয়েছে ৯০২ টাকা। আর বেসরকারি কোম্পানির একই সিলিন্ডারের দাম ৮৬৬ টাকা। তবে শুনানিতে সরকারি এলপিজি কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফজলুর রহমান বিইআরসির সুপারিশের সঙ্গে দ্বিমত প্রকাশ করেন। তিনি মনে করেন সরকারি এলপিজির দাম আরও কম হওয়ার উচিত।উল্লেখ্য, সরকারি কোম্পানি তাদের সাড়ে ১২ কেজির সিলিন্ডার ৬০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৭০০ টাকা করার প্রস্তাব করেছিল। কিন্তু মূল্যায়ন কমিটি তাদের সিলিন্ডারের দাম আরও ২০০ টাকা বাড়িয়ে ৯০২ টাকা, আর বেসরকারি কোম্পানিগুলোর সিলিন্ডারের বর্তমান দাম এক হাজার ২৬৯ টাকা থেকে কমিয়ে ৮৬৬ টাকা করার সুপারিশ করে।শুনানিতে বিইআরসির চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল, সদস্য মোহাম্মদ আবু ফারুক, মকবুল-ই-ইলাহি চৌধুরী, মোহাম্মদ বজলুর রহমান, মো. কামরুজ্জামান উপস্থিত ছিলেন।সরকারি কোম্পানির পক্ষে এলপি গ্যাস লিমিটেডের ফজলুর রহমান এবং বেসরকারি কোম্পানিগুলোর পক্ষে ছয়জনের একটি প্রতিনিধি দল দামের প্রস্তাব উপস্থাপন করে। বেসরকারি কোম্পানির মধ্যে ওমেরা, বসুন্ধরা, বেক্সিমকো, পেট্রোম্যাক্সের প্রতিনিধি উপস্থিত ছিলেন।

কমিশনের কারিগরি কমিটি সরকারি এলপি গ্যাস লিমিটেডের দাম নির্ধারণের ক্ষেত্রে সাড়ে ১২ কেজির প্রতি বোতল (সিলিন্ডার) এলপিজি বিক্রিতে ৩৩৩ টাকা ২৪ পয়সার ক্রস সাবসিডি ফান্ড তৈরির সুপারিশ করে। অর্থাৎ কারিগরি কমিটির এ প্রস্তাব মেনে নিলে গ্রাহক সরকারি এলপিজি কিনলে প্রতি বোতলে এই টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে, যা সাবসিডি তহবিল নামে একটি সরকারি তহবিলে জমা থাকবে। সেখান থেকে পরে সাবসিডি বা ভর্তুকি দেওয়া হবে। যদিও এর আগে কমিশনের করে দেওয়া বিদ্যুৎ উন্নয়ন তহবিল এবং জ্বালানি নিরাপত্তা তহবিল নামে দুটি তহবিলে জমা হওয়া টাকা এভাবে গ্রাহকের কাছ থেকে নিয়ে জ্বালানি এবং বিদ্যুৎ বিভাগকে দেওয়া হয়েছে। সে সময় কমিশন বলেছিল, এতে সরকারি খাতের আর্থিক অনটন দূর হবে। আর্থিক সংকট না থাকলে সরকারি প্রকল্প বাস্তবায়ন হবে। এতে দাম কমে আসবে। কিন্তু তহবিল গঠনের এত বছর পরও সেই আশা বাস্তবায়ন হয়নি। মূল্যায়ন কমিটির পক্ষে কমিশনের উপপরিচালক কামরুজ্জামান সুপারিশগুলো তুলে ধরেন।