তাপপ্রবাহের কারণে স্কুল-কলেজ বন্ধ ঘোষণাতীব্র তাপপ্রবাহ: ৭ দিন স্কুল বন্ধের দাবি ভেজাল নকল পণ্যে সর্বনাশতাপমাত্রা আরও বাড়তে পারেতাপপ্রবাহ আরও কত দিন থাকবে জানালো আবহাওয়া অধিদপ্তর
No icon

বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা আসছে নজরদারির আওতায়

দেশে কর্মরত অধিকাংশ বিদেশি কর্মীর শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা বা পদমর্যাদার সঙ্গে ওয়ার্ক পারমিটে প্রদর্শিত বেতন সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আবার ক্ষেত্র বিশেষ শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার সঙ্গে ওয়ার্ক পারমিটে দেখানো পদবিতে অসামঞ্জস্য আছে। বিদেশিরা মূলত এ দু পদ্ধতিতেই প্রকৃত তথ্য গোপন করে টাকা পাচার ও আয়কর ফাঁকি দিচ্ছেন।সম্প্রতি সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার অনুসন্ধানে বিদেশি কর্মীদের কর ফাঁকি ও অর্থ পাচারের এ কৌশল বেরিয়ে এসেছে। এসব রোধে বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতা নজরদারির আওতায় আনা হচ্ছে। এর অংশ হিসেবে বিদেশিদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে বেতন দেয়া বাধ্যতামূলক এবং বেতন কাঠামো পুনর্নির্ধারণে সুপারিশ করেছে সংস্থাটি। এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে চিঠি দেয়া হয়েছে।এদিকে টিআইবির এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশে বৈধ-অবৈধভাবে প্রায় আড়াই লাখ বিদেশি কর্মী কাজ করছেন। ন্যূনতম এ সংখ্যার হিসেবে দেশ থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ২৬ হাজার ৪০০ কোটি টাকা পাচার হয়ে যায়। পাশাপাশি বিদেশিদের কর ফাঁকির ফলে বছরে ১২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। বাংলাদেশে কর্মরত বিদেশি কর্মীরাই তথ্য গোপন করে এ টাকা পাচার করেন বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।

জানা গেছে, নিয়োগদাতার সঙ্গে অলিখিত চুক্তি অনুযায়ী বিদেশি কর্মীদের বেতনের বড় একটি অংশ বিদেশে হস্তান্তর করা হয়। পুরো বেতন দেশে দেয়া হলে নিয়মানুযায়ী শতকরা ৩০ ভাগ আয়কর দিতে হয়। এতে বড় অংকের টাকা চলে যায়। কাজেই তারা বেতনের বড় অংশ নিজ দেশে বা অন্য কোনো দেশে গ্রহণের ক্ষেত্রেই বেশি আগ্রহী। দেশের বাইরে বেতন বাবদ দেয়া টাকার বৈধ কোনো রেকর্ড বাংলাদেশে থাকে না।এভাবে পরিশোধিত টাকা বিভিন্ন ভাবে পাচার হচ্ছে। এর কোনো আয়কর সরকার পাচ্ছে না। ফলে সব দিক থেকে লোকসান হচ্ছে বাংলাদেশের। বর্তমানে কত বিদেশি বাংলাদেশে কাজ করছেন, তার সঠিক তথ্য সরকারের সংশ্লিষ্ট কোনো সংস্থার কাছেই নেই। আয়কর বিভাগের রিটার্ন জমার তথ্যের সঙ্গে বিডা, বেপজা, এনজিও ব্যুরোর তথ্যের মিল নেই। তবে টিআইবির এক প্রতিবেদনে একটি পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে।বিশেষ সংস্থাটির চিঠিতে বলা হয়েছে, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা), অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা), রফতানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা) ও হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের ইস্যুকৃত ওয়ার্ক পারমিটে বিদেশি কর্মীদের বেতন-ভাতার বিষয়টি সুস্পষ্ট উল্লেখ থাকছে না। তদন্তে বিদেশিদের বেতন-ভাতা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাওয়া হলে অনেক ক্ষেত্রে তারা নিজ দেশ থেকে বেতন-ভাতা গ্রহণ করে বলে জানান। বিধায় ওয়ার্ক পারমিটে তা উল্লেখ থাকে না। কর্মীর নিজ দেশে বেতন-ভাতা প্রদান এবং বাংলাদেশে কর্মকালীন বিদেশির ভরণ-পোষণের ব্যয়ভারের বিষয়টি ওয়ার্ক পারমিটে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা প্রয়োজন।এতে আরও বলা হয়েছে, অধিকাংশ বিদেশি কর্মীদের শিক্ষাগত যোগ্যতা, অভিজ্ঞতা ও পদমর্যাদার আলোকে ওয়ার্ক পারমিটে প্রদর্শিত বেতন-ভাতা সামঞ্জস্যপূর্ণ ও বিশ্বাসযোগ্য নয়। আবার অনেক ক্ষেত্রে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতা ও পূর্ব অভিজ্ঞতার সঙ্গে ওয়ার্ক পারমিটে প্রদর্শিত পদবি অসামঞ্জস্যপূর্ণ।