প্রধানমন্ত্রী আজ থাইল্যান্ড যাচ্ছেনগরমের তীব্রতা কমাতে কী কাজ করেছেন, জানালেন হিট অফিসারবিনা ভোটে নির্বাচিত ৩৩ প্রার্থীসব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি যেসব অঞ্চলে
No icon

স্বজনদের ভাসানচরে ডাকছে রোহিঙ্গারা

দুই দিন ধরে কক্সবাজারের রোহিঙ্গা শিবির থেকে চট্টগ্রাম হয়ে ভাসানচরযাত্রার ক্লান্তি। এরপর নতুন পাকা দালানের ঘরে অনেকের জীবনে প্রথমবারের মতো খাটের বিছানায় ঘুম। এবার ঘর গোছানোর পালা। গতকাল শনিবার সেই কাজেই ব্যস্ত হয়ে পড়েন ভাসানচরের নতুন বাসিন্দারা। সব মিলিয়ে এক হাজার ৬৪২ জনের জীবনের নতুন এক অভিজ্ঞতা, সঙ্গে মুক্ত ও নতুন জীবনের স্বপ্ন। ঘরের কাজ করতে করতেই নিজেদের এই স্বপ্নের সঙ্গী হতে অনেকেই কক্সবাজারের শিবিরে থাকা স্বজনদের ভাসানচরে ডাকছিলেন।ইসমাইলের পাঁচ বছর বয়সী ছেলে উচ্ছ্বসিত সকালের খাবার নিয়ে। সকালের নাশতার সঙ্গে আপেল দেওয়া হবে কখনো ভাবেননি তিনি নিজেও। আপেল খাবে না রেখে দেবে প্রশ্ন করছিল তাঁর ছেলে।

পাশের কক্ষে ইউনুসের পরিবার। চার সদস্যের ওই পরিবারের শিশুরা বিছানায় বসে খেলছিল। সেটা দেখেই আনন্দিত ইউনুস। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তিনিও বলেন, সাড়ে তিন বছর আগে বাংলাদেশই তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। মিয়ানমারে তাঁদের পাকা ঘর বানাতে দেওয়া হতো না। কোনোভাবে খুপরি ঘর বানিয়ে ছিলেন। শেষ পর্যন্ত সেটিও জ্বালিয়ে দেয় মিয়ানমার সেনাবাহিনী। প্রাণ বাঁচাতে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়ার পর খুপরি ঘরেই থাকতে হতো। পানির সংকটও ছিল। কিন্তু ভাসানচরে ইটের দালানে ঘর, খাট, বিদ্যুতের মতো সুবিধা পেয়ে তাঁর পরিবার অভিভূত।ইউনুস বলেন, জীবনে প্রথম রাত তিনি ও তাঁর পরিবার পাকা দালানে, খাটের বিছানায় ঘুমিয়েছেন। এ এক বড় প্রশান্তি। তিনি বলেন, কক্সবাজারে স্বজনদের সঙ্গে তাঁর কথা হচ্ছে। তিনি তাঁদেরকেও ভাসানচরে চলে আসতে বলেছেন।

কয়েক ঘর পরে এক নারীকে মোবাইল ফোনে কথা বলতে দেখা যায়। জানালা দিয়ে উঁকি দিতেই তিনি কথা বলতে বলতে বেরিয়ে আসেন। তখন তাঁকে ফোনে কক্সবাজারে থাকা এক স্বজনকে বলতে শোনা যায় ঘর আছে, বিদ্যুৎ, পানি, রান্নাঘর আছে। সব ভালো।কথা হয়েছে ৩০ বছর বয়সী আরেকজনের সঙ্গে। তিনি একা একটি কক্ষ পেয়েছেন। কালের কণ্ঠকে তিনি জানান, মা-বাবাকে কক্সবাজারের কুতুপালং শিবিরে রেখে একাই এসেছেন তিনি। গতকাল সকালে মোবাইল ফোনে তিনি তাঁর বাবার সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি চান, তাঁর মা-বাবাও যেন চলে আসেন ভাসানচরে।

মাঝ বয়সী এক নারী বলেন, সবই ভালো। কিন্তু বাথরুম, টয়লেট কয়েকটি ঘর পরে। তাঁর কথা শেষ না হতেই তাঁর স্বামী বলে ওঠেন, কুতুপালং শিবিরে তো আরো দূরে ছিল। সেখানকার তুলনায় অনেক ভালো।কক্সবাজার থেকে রোহিঙ্গাদের সঙ্গে আনা মালামাল গতকাল তাঁদের বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে তাঁদের মধ্যে মানবিক সহায়তাসামগ্রীও বিতরণ শুরু হয়েছে। ভাসানচরে আশ্রয়ণ-৩ প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী এবং শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনারের দপ্তরের কর্মকর্তারা বলেছেন, প্রথম পাঁচ-সাত দিন রোহিঙ্গাদের রান্না করা খাবার দেওয়া হবে। এই সময়ের মধ্যে রোহিঙ্গাদের মানবিক সহায়তাসামগ্রী বিতরণ করা শেষ হলে তাঁরা নিজেরাই কক্সবাজারের ক্যাম্পের মতো রান্না করে খেতে পারবেন।