সব ধরনের যাত্রীবাহী ট্রেনে ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়েতাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রির বেশি যেসব অঞ্চলেবিশ্ব ধরিত্রী দিবস আজপ্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ: সংশোধিত ফলাফলে উত্তীর্ণ ৪৬ হাজারসকালের মধ্যে ৮০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস
No icon

কক্সবাজারের চেয়ে ১৮টি উন্নত সেবা ভাসানচরে

কক্সবাজার থেকে ভাসানচরে স্থানান্তরের পর ১৮টি উন্নত সুবিধা পাবে রোহিঙ্গারা। তাদের শিক্ষা চিকিৎসা এবং সামাজিক মান উন্নয়ন ও সীমিত আকারে কর্মসংস্থানের সুযোগ দেয়া হবে।এক্ষেত্রে তারা সরাসরি অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতে পারবে না। কিন্তু বাংলাদেশ নৌবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসনের নেয়া বিভিন্ন প্রকল্পে কাজ করতে পারবে।এসব প্রকল্পের মধ্যে আছে দুগ্ধ খামার, ধান ও সবজি চাষ, হস্তশিল্প, মহিলাদের জন্য সেলাই কাজ, সমাজসেবা (ভোকেশনাল ট্রেনিং) এবং পর্যটন উল্লেখযোগ্য।প্রকল্পগুলোতে মজুরির বিনিময়ে রোহিঙ্গাদের কাজ দেয়া হবে। এখানে কক্সবাজারের চেয়ে উন্নত যেসব সেবা দেয়া হবে তা হল- উন্নত আবাসন, পর্যাপ্ত সুপেয় পানি, পরিবেশসম্মত সেনিটেশন সুবিধা।এছাড়া খাদ্য সংরক্ষণ ও সরবরাহ ব্যবস্থা, নিরবচ্ছিন বিদ্যুৎ সরবরাহ, উন্নত ও স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ, অভ্যন্তরীণ যোগাযোগ, দুর্যোগে ক্ষতির ঝুঁকি কম, পর্যটনের ওপর প্রভাব কম, টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা থাকবে।মানব ও মাদক পাচার বন্ধ, অগ্নিকাণ্ডের ঝুঁকি কম, উন্নত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিকল্প রান্নার ব্যবস্থাও থাকছে।যেহেতু অস্থায়ীভাবে রোহিঙ্গারাই থাকবে, সেখানে চাষাবাদ ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে তাদেরই কাজে লাগানো হবে। এতে তাদেরও আয় হবে। রোহিঙ্গারা নিজ উদ্যোগেও মুরগি পালতে পারবে।  জানা গেছে- নিরাপত্তা ও মানসম্মত জীবনের সব ধরনের ব্যবস্থা রয়েছে ভাসানচরে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরের ঘরগুলো বাঁশ ও ত্রিপল দিয়ে ঘেরা। সেগুলো প্রাকৃতিক দুর্যোগে ঝুঁকিপূর্ণ।অন্যদিকে ভাসানচরের ঘরগুলো স্ট্যান্ডার্ড ক্লাস্টার হাউস। সেখানে প্রতিটি ঘরের জন্য জাতিসংঘ শরণার্থী সংস্থার (ইউএনএইচসিআর) স্ট্যান্ডার্ড মেনে ৩ দশমিক ৯ বর্গমিটার জায়গা রাখা হয়েছে।কক্সবাজারে অধিক জনসংখ্যার কারণে পানির স্তর দিন দিন নিচে নামছে। ভাসানচরে আছে ইউএনএইচসিআরের স্ট্যান্ডার্ড মেনে ভুগর্ভস্থ পানি এবং পুকুর, হ্রদ ও খালের ব্যবস্থা এছাড়াও বৃষ্টির পানি হারভেস্টের মাধ্যমে প্রক্রিয়াজাত করে রাখার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।কক্সবাজারে ২০ জনের জন্য ১ টয়লেট এবং ৮০ জনের জন্য ১ গোসল খানা।

কিন্তু ভাসানচরে ১১ জনের জন্য একটি টয়লেট ও ১৬ জনের জন্য ১ গোসল খানার ব্যবস্থা করা হয়েছে।কক্সবাজারে খাদ্যগুদাম নেই, সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো নয়, দীর্ঘপথ পাড়ি দিয়ে খাদ্য পৌঁছাতে হয়। কিন্তু ভাসানচরে খাদ্য সংরক্ষণে চারটি উন্নত ওয়্যার হাউস রয়েছে।যেখানে এক লাখ মানুষের তিন মাসের খাবার মজুদ ও উন্নত পরিবেশ নিশ্চিতের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজারে রোহিঙ্গা শিবিরের বেশির ভাগ এলাকাই যেখানে অন্ধকারাচ্ছন্ন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা কঠিন।আর ভাসানচরে ডিজেল জেনারেটর, সৌরবিদ্যুৎ এবং সৌরশক্তির মাধ্যমে ভূগর্ভস্থ পানি উত্তোলনের ব্যবস্থা রয়েছে। কক্সবাজারে অধিক জনবল এবং বসবাসের অনুপযোগী।বিপরীতে ভাসানচরে উন্নত পরিবেশ, তুলনামূলকভাবে কম জনসংখ্যা। কক্সবাজারে উচ্চ বনাঞ্চল, জৈব-বৈচিত্র্যের অবক্ষয়, উচ্চ বায়ুদূষণ, মাটির ক্ষয়, ভূমিধস এবং পরিবেশের ভারসাম্যহীনতার সুযোগ রয়েছে।বিপরীতে ভাসান চরে বনায়নের বিশাল সুযোগ, মাটির ক্ষয় হবে না এবং ভূগর্ভস্থ পানি নিচে যাওয়া ঝুঁকি নেই। কক্সবাজারে যানজট, সড়ক যোগাযোগ সীমিত, রাস্তা নির্মাণ ব্যয়বহুল এবং আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখা কঠিন।কিন্তু ভাসানচরে পরিকল্পিত রাস্তা, যানবাহনের সুবিধা এবং উন্নত যাতায়াত সুবিধা রয়েছে। কক্সবাজারে ভূমিধস ও ঘূর্ণিঝড়কালীন ঝুঁকি রয়েছে। ভাসানচরে ক্লাস্টারের পাশেই ১২০টি সাইক্লোন শেল্টার থাকায় ঝুঁকি কম।কক্সবাজারে পর্যটনের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়েছে। ভাসানচরে সে ধরনের কোনো প্রভাব নেই। কক্সবাজারে প্রায়ই মানব ও মাদক পাচার ধরা পড়ছে।আকয়লার ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু ভাসানচরে বায়োগ্যাস এবং প্ল্যান্টের সঙ্গে পরিবেশবান্ধব চুলা রয়েছে। জানা গেছে, মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতনে দেশটি থেকে বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের নোয়াখালীর ভাসানচরে গড়ে তোলা হয়েছে আধুনিক সুবিধাসম্বলিত পরিকল্পিত অস্থায়ী আবাসন প্রকল্প।