আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে (আইসিটি) মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় শেখ হাসিনাসহ তিন আসামির রায় ঘোষণা নিয়ে সারাদেশে উত্তেজনা বিরাজ করছে। কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগ রায় বাতিল এবং ট্রাইব্যুনালের কার্যক্রম বন্ধের দাবিতে রবি ও সোমবার কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে, যার প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও।ককটেল, পেট্রোল বোমা বিস্ফোরণ, যানবাহনে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় অভিভাবকদের মনে নানা শঙ্কা ভর করেছে। সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে ভয় পাচ্ছেন তারা। অনেক বিদ্যালয়ে আজ থেকে বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা ছিল। সেগুলোও ব্যাহত হচ্ছে।রাজধানীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো আনুষ্ঠানিকভাবে বন্ধ ঘোষণা না করলেও অনানুষ্ঠানিকভাবে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়ে আসতে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।গোপালগঞ্জ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। আওয়ামী লীগের লকডাউন কর্মসূচি ঘিরে অপ্রীতিকর ঘটনা এড়ানোর জন্য রোববার ও আজকের সব পরীক্ষা এবং বাস চলাচল সর্বসম্মতিক্রমে বন্ধ ঘোষণা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। জনসংযোগ দপ্তরের পরিচালক সহযোগী অধ্যাপক মো. আব্দুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
তবে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা থাকবে। ক্লাসের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সভাপতি ও ডিনরা সিদ্ধান্ত নেবেন। প্রয়োজনে অনলাইনে জুম প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ক্লাস নেওয়া যেতে পারে। রবি ও সোমবারের পরীক্ষাগুলো শুক্র ও শনিবার নেওয়া যেতে পারে। বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানানো হয়, এ ছাড়া রোববার পরিবহন সেবা বন্ধ থাকবে। পরিস্থিতি বিবেচনায় পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।এদিকে গতকাল থেকেই আইসিটি ও হাইকোর্ট এলাকায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী, র;্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলো কড়া পাহারা দিচ্ছে। আদালত এলাকার প্রতিটি প্রবেশপথে চেকপোস্ট স্থাপন করা হয়েছে। নজরদারি ও টহল বাড়ানোর পাশাপাশি নিরাপত্তা সংস্থাগুলো সম্ভাব্য যে কোনো নাশকতা ঠেকাতে প্রস্তুত বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে দুই দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগীয় শহরে যানবাহনে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। তার মধ্যে ঢাকায় একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে আগুন দেওয়া হয়।
এতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষও উদ্বিগ্ন। তবে সরকারের পক্ষে বন্ধের কোনো সিদ্ধান্ত না থাকায় প্রতিষ্ঠান খোলা রেখেছেন অধ্যক্ষ ও প্রধান শিক্ষকরা। ১৪ নভেম্বর কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় ও স্কুল (বাংলা ও ইংরেজি মাধ্যম) অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিলে বিতর্কের সৃষ্টি হওয়ায় আজ এমন সিদ্ধান্ত কেউ আর নেয়নি।কয়েক অভিভাবক জানান, স্কুলগুলোর সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা স্পষ্ট কোনো সিদ্ধান্ত পাচ্ছেন না। বরং শিক্ষকরা অভিভাবকদের ওপরেই সিদ্ধান্ত ছেড়ে দিয়েছেন।সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মাধ্যমিক শাখার পরিচালক অধ্যাপক ড. খান মইনুদ্দিন আল মাহমুদ সোহেল সমকালকে বলেন, স্কুল বন্ধ বা অনলাইনে ক্লাস নেওয়ার কোনো নির্দেশনা দেওয়া হয়নি। তবে নাশকতা এড়াতে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের।