আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অনানুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থী চূড়ান্ত করছে বিএনপি। ইতোমধ্যে দুই শতাধিক প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। ৫০টির মতো আসনে প্রার্থী যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। সমমনা দল ও জোটকে আসন ছাড় দেওয়ার পর বাকি আসনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। বিএনপির দলীয় সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। একই সঙ্গে আগামী নির্বাচনের জন্য বিএনপির ইশতেহার প্রস্তুতের কাজও শুরু করা হয়েছে। খাত অনুযায়ী সংশ্লিষ্টদের ইশতেহার তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।বিএনপির একাধিক জ্যেষ্ঠ নেতা জানান, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব আগামী নির্বাচনকে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছেন। এর অংশ হিসেবে গ্রহণযোগ্য প্রার্থীর খোঁজে এরই মধ্যে একাধিক মাঠ জরিপ করা হয়েছে। সেই জরিপের ফল এবং দলের নীতিনির্ধারণী নেতাদের মতামত ও তৃণমূলে জনপ্রিয়তার নিরিখে প্রার্থী তালিকা অনেকটাই চূড়ান্ত করা হয়েছে।এই নেতারা জানান, ওই তালিকা ধরে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্ভাব্য প্রার্থীকে সবুজ সংকেত দিচ্ছেন। তাদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার জন্য বলছেন। যেসব এলাকায় কোন্দল আছে, মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে বিভাজন আছে, সেসব এলাকার প্রার্থীদের স্কাইপে সংযুক্ত করে দলের নির্দেশনা মেনে চলার জন্য নির্দেশনা দিচ্ছেন তিনি।
দল থেকে যাকেই মনোনয়ন দেওয়া হোক না কেন, তাঁর পক্ষে সবাইকে কাজ করতে বলছেন। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা করলে তাৎক্ষণিক সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে হুঁশিয়ার করে দিচ্ছেন। প্রকাশ্য বক্তৃতায়ও তিনি দলের ঐক্য ধরে রাখার ওপর জোর দিচ্ছেন গত কিছু দিন ধরে।দলীয় সূত্র জানায়, সংখ্যানুপাতিক পদ্ধতির (পিআর) নির্বাচন আর জুলাই সনদ নিয়ে জামায়াতে ইসলামী রাজপথে আন্দোলন শুরু করেছে। তারা নির্বাচনের সার্বিক প্রস্তুতিও শুরু করেছে অনেক আগ থেকে। সারাদেশে জামায়াত তাদের প্রার্থী চূড়ান্ত এবং ঘোষণাও করেছে। তাদের নেতাকর্মীরা বাড়ি বাড়ি গিয়ে গণসংযোগ করছেন। এ অবস্থায় বিএনপিও মৌখিকভাবে সম্ভাব্য প্রার্থীদের সবুজ সংকেত দিয়ে মাঠে নামাচ্ছে।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে বিএনপি দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছে। এর মধ্যে মাঠ জরিপ, তৃণমূল নেতাকর্মীদের মতামত সংগ্রহসহ কয়েক ধরনের উদ্যোগ চলছে। এসব প্রক্রিয়ায় যে প্রার্থী এগিয়ে থাকছেন, তাঁকে দল মনোনয়ন দেবে। তবে এখনই সবকিছু চূড়ান্ত হয়ে যায়নি।
ঢাকায় কারা সবুজ সংকেত পেলেন
বিএনপির জ্যেষ্ঠ এবং মাঠ পর্যায়ের নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঢাকা মহানগরের ১৫টি আসনের মধ্যে কয়েকটি আসনে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। এর মধ্যে ঢাকা-৪ আসনে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবীন, ঢাকা-৮ আসনে মির্জা আব্বাস, ঢাকা-১৩ আসনে সমমনা দল এনডিএম চেয়ারম্যান ববি হাজ্জাজ, ঢাকা-১৬ আসনে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমিনুল হক, ঢাকা-১৭ আসনে সমমনা দল বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থকে চূড়ান্ত বার্তা দেওয়া হয়েছে।জানতে চাইলে ববি হাজ্জাজ গতকাল জানান, বিএনপির সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে মোহাম্মদপুর আসনের (ঢাকা-১৩) বিষয়ে তাঁকে নিশ্চিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, & আমি এলাকায় কাজ শুরু করেছি।প্রার্থিতার বিষয়ে বিজেপি চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান বলেন, মনোনয়ন বিষয়ে তিনি কোনো কথা বলবেন না। তবে তিনি এলাকায় কাজ করছেন।গুলশান এলাকার বিএনপি নেতাকর্মীরা সমকালকে বলেছেন, আন্দালিব রহমান পার্থের মনোনয়নের বিষয়ে দল থেকে তাদের বলা হয়েছে। তারা পার্থর পক্ষে কাজ করছেন। এর মধ্যে আন্দালিব রহমান পার্থর সঙ্গে সাংগঠনিক আলোচনা, মতবিনিময় সভাও করেছে স্থানীয় বিএনপি। ঢাকার বাকি আসনের প্রার্থীরা দলের সবুজ সংকেত পাওয়ার কথা