NEWSTV24
জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ ও সাম্যের দেশ গড়তে চায়
বুধবার, ০৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৫ ২৩:২৩ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টানসহ সকল ধর্মের লোকজনের উদ্দেশে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইনসাফ ও সাম্যের একটি দেশ গড়তে চায়, যেখানে সকল ধর্মাবলম্বীর লোকজন আতঙ্কে থাকবে না। তারা এদেশে বসবাস করবে মর্যাদার সাথে। কেউ তাদের জানমাল এবং ইজ্জতে হাত দেবে না। সেইসাথে তিনি ইনসাফ ও সাম্যের বাংলাদেশ গড়ার বাণী ঘরে ঘরে পৌঁছাতে জামায়াতের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান।
গত ২৫ জানুয়ারি শনিবার দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে বিশাল কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মী সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন দিনাজপুর জেলা আমীর অধ্যক্ষ আনিসুর রহমান। জেলা সেক্রেটারি ড. এনামুল হকের সঞ্চালনায় সম্মেলনে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল পরিচালক মাওলানা আবদুল হালিম, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চলের সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ ও অঞ্চল টিম সদস্য অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক কেন্দ্রীয় সভাপতি ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের সহকারী সেক্রেটারি মো. দেলোয়ার হোসেন।
এছাড়া বক্তব্য রাখেন ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদ সদস্য ও শহর সভাপতি মো. মুশফিকুর রহমান, দিনাজপুর জেলার ফুলবাড়ী উপজেলা আমীর মাওলানা মো. হাবিবুর রহমান, কাহারোল উপজেলা আমীর মাওলানা তরিকুল ইসলাম, খানসামা উপজেলা আমীর মাওলানা মো. আনিসুর রহমান, বিরল উপজেলা আমীর হাফেজ মো. আব্দুর রশিদ, ঘোড়াঘাট উপজেলা আমীর মো. মোফাখখায়ের ইসলাম মোল্লা, পাবর্তীপুর উপজেলা আমীর ইউসুফ আলী, বিরামপুর উপজেলা আমীর মো. হাফিজুল ইসলাম, নবাবগঞ্জ উপজেলা আমীর অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, চিরিরবন্দর উপজেলা আমীর মো. রাশেদুল হক, হাকিমপুর উপজেলা আমীর মাওলানা আমিনুল ইসলাম, বোচাগঞ্জ উপজেলা আমীর মাওলানা মো. আমিনুল হক, বীরগঞ্জ উপজেলা আমীর কারী আজিজুর রহমান, সদর উপজেলা আমীর মো. মেহরাব আলী, ঢাকা মহানগর উত্তর তুরাগ থানা আমীর মো. মতিউর রহমান, শহর আমীর মো. সিরাজুস সালেহীন, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মাওলানা মুজিবুর রহমান, জেলা ইউনিট সদস্য এডভোকেট মাইনুল আলম, জেলা দক্ষিণ ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. সাজিদুর রহমান সাজু, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মো. তৈয়ব আলী, জেলা কর্মপরিষদ সদস্য মো. আলমগীর হোসেন, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. জাকিরুল ইসলাম, মো. সহিদুল ইসলাম খোকন, অধ্যাপক আ স ম ইব্রাহীম, মাওলানা রবিউল ইসলাম, অধ্যক্ষ একেএম আফজালুল আনাম, এডভোকেট মাহবুবুর রহমান ভুট্টো, দিনাজপুর জেলা উত্তর ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. রাসেল রানা প্রমুখ।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের সময় একজন নায়েবে আমীরের জানাযা এ মাঠে করতে দেয়নি। ছাত্র-জনতা বিরাট আকাক্সক্ষা নিয়ে অত্যাচারীদের বিদায় করতে পেরেছে। কোনো রাজনীতিবিদের এমন কথা বলা উচিত নয়, যাতে ফ্যাসিস্টরা উৎসাহিত হয়। ছাত্র-জনতার লক্ষ্য ব্যাহত হয়। তিনি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের কাছে আনুপাতিক ভোট পদ্ধতি বাস্তবায়নের দাবি জানান। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সাম্য মানবিক ও সম্প্রীতির বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায় বলে জানান তিনি।
অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দিন বলেন, একটি দল মনে করেছিল জামায়াতে ইসলামী নিঃশেষ হয়ে গেছে। কিন্তু না, বরং তারা ঈমানের বলে বলীয়ান হয়ে কাজ করেছে। তাই আজ কর্মী সম্মেলন মহাসমাবেশে পরিণত হচ্ছে। তিনি জামায়াতে ইসলামীর কর্মীদের মানুষের মাঝে আরও বেশি ঈমানের দাওয়াত দেওয়ার আহ্বান জানান।
অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বেলাল বলেন, বিগত ১৬ বছর দেশ এক খুনি ডাকাতের হাতে বন্দী ছিল; যিনি গুম করেছেন, খুন করেছেন, আয়নাঘর বানিয়েছেন, তিনি আজ কোথায়? দিল্লিতে। ভারত মূলত বাংলাদেশের কল্যাণ চায় না। এজন্য আমাদের বিরুদ্ধে উসকানিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। ফেলানীকে হত্যা করে কাঁটাতারে ঝুলিয়ে রেখেছিল। আমরা দাবি করছি, হাসিনা যেন সব হত্যাকাণ্ডের ন্যায্যবিচার পান, সেজন্য তাকে ফেরত দিতে হবে। তিনি আরও বলেন, এমন এক দেশের স্বপ্ন দেখি যে দেশে থাকবে না ঘুষ-সুদ-দুর্নীতি। যেখানে মা বোনেরা থাকবে নিরাপদে। যেখানে শোষণ নির্যাতন থাকবে না। এ স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে জামায়াত। তারা আমাদের ১১ শীর্ষ নেতাকে হত্যা করেছে। দ্বিগুণ শক্তি নিয়ে আমরা টিকে আছি। তিনি উত্তরবঙ্গের নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের দ্রুত মুক্তির দাবি জানান।
মাওলানা আবদুল হাকিম বলেন, সৃষ্টিকর্তার আইন বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত দেশে শান্তি আসবে না। দেশে বার বার নেতার পরিবর্তন হয়েছে। নীতির পরিবর্তন না হওয়ায় দেশে শান্তি আসেনি।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি ও জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি রাজীবুর রহমান পলাশ বলেন, জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে দীন বিজয়ের অগ্রযাত্রা থামিয়ে রাখা যায় না। জীবন্ত শহীদদের সাথে নিয়ে শান্তি ও সমৃদ্ধির দেশ গড়বো। নয়া ফ্যাসিবাদের পদধ্বনি শোনা যাচ্ছে। তাদের আর সেই সুযোগ দেওয়া যাবে না। তিনি বলেন, দিনাজপুর তথা উত্তরবঙ্গকে আগামীতে সমৃদ্ধ এলাকা হিসেবে দেখতে চাই।
খেলাফত মজলিসের জেলা সভাপতি মাওলানা রেজাউল করিম বলেন, নব্য ফ্যাসিস্টদের জানিয়ে দিতে চাই কুরআন-সুন্নাহবিরোধী কোনো ষড়যন্ত্র আর বাংলার মানুষ মেনে নেবে না। হাসিনা রাজাকার শব্দ ব্যবহার করে পতন টেনে এনেছিলেন। আমরা জোট করবো সিসা ঢালা প্রাচীরের মতো।
হেফাজতে ইসলামের জেলা সেক্রেটারি মাওলানা যোবায়ের সাঈদ বলেন, মদিনার সনদ দিয়ে সব ধর্মের মানুষকে রাসূল (সা.) ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি বাংলাদেশেও সেই ফর্মূলা বাস্তবায়নের আহ্বান জানান।
নিতাই চন্দ্র দেবনাথ বলেন, সারা দেশের মানুষ আশার আলো দেখতে শুরু করেছে। ৫ আগস্টের পর তাণ্ডব শুরু হয়েছিল। জামায়াত-শিবির আমাদের পাশে না থাকলে কী যে হতো! তাদের কারণে আমাদের জীবন এবং সম্পদ বেঁচে গেছে। জামায়াতের নেতাকর্মীরা আমাদের শত্রু না মনে করে ঢাল হিসেবে দাঁড়িয়েছিল। অথচ তাদের কোনোদিন ভোট দেইনি। আবেগে আপ্লুত হয়ে আমি জামায়াতে যোগদান করেছি। আরও অনেকেই যোগদান করেছে। প্রত্যেকটা আসনে যেন জামায়াত জয়ী হয় সেই প্রত্যাশা রাখি। একমাত্র জামায়াতের শাসনামলেই আমরা নিরাপদ থাকতে পারি।
দিনাজপুর জেলার সাবেক আমীর মো. আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ১৩টি উপজেলার মধ্যে ৭টি সীমান্তঘেষা। লুটপাটের কারণে এখানে উন্নয়ন নেই।
দিনাজপুর জেলার আরেক সাবেক আমীর মো. আফতাব উদ্দীন মোল্লা বলেন, লুটপাটের কারণে দিনাজপুরে কলকারখানা গড়ে উঠেনি। উন্নয়ন চাইলে আগামী দিনে কুরআনের আইন বাস্তবায়ন করতে হবে।
ঠাকুরগাঁও জেলা আমীর অধ্যাপক বেলাল উদ্দীন প্রধান বলেন, আমরা শোষণমুক্ত একটি বাংলাদেশ উপহার দিতে চাই। এজন্য প্রয়োজন ইসলামী বিপ্লব।
পঞ্চগড় জেলা আমীর অধ্যাপক ইকবাল হোসেন বলেন, আগামী দিনের বাংলাদেশকে ফ্যাসিবাদ, বৈষম্য, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজমুক্ত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আপনারা জামায়াতে ইসলামীর হাতকে শক্তিশালী করুন।