NEWSTV24
শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস আজ
বুধবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২২ ১৫:১৪ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের মর্মন্তুদ দিন আজ। শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস, বিজয়ের ঊষালগ্নে দেশের শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের হারানোর দুঃসহ যন্ত্রণার দিন। ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিসংগ্রামের শেষ লগ্নে বাঙালি যখন চূড়ান্ত বিজয়ের শেষ প্রান্তে, ঠিক তখনই একাত্তরের এই দিনে এ দেশীয় রাজাকার, আলবদর, আলশামস ও শান্তি কমিটির সদস্যরা মেতে ওঠে দেশের বুদ্ধিজীবীদের বর্বরোচিত হত্যাযজ্ঞে। বিজয়ের চূড়ান্ত মুহূর্তে বাঙালি মেধার সে নৃশংস নিধনযজ্ঞ আনন্দোন্মুখ জাতিসহ গোটা বিশ্বকেই হতবিহ্বল করে তোলে।পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মাত্র দুদিন আগে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর রাতের আঁধারে ঘাতকচক্র শুধু ঢাকা শহরেই প্রায় ১৫০ বুদ্ধিজীবী ও বিভিন্ন পেশার কৃতী মানুষকে চোখ বেঁধে অপহরণ করে নিয়ে যায় অজানা স্থানে। সান্ধ্য আইনের মধ্যে সেই রাতে তালিকা ধরে ধরে শিক্ষক, সাংবাদিক, চিকিৎসক, প্রকৌশলী, আইনজীবী, শিল্পী, সাহিত্যিক, সংস্কৃতিসেবী ও পদস্থ সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তাদের ঘর থেকে টেনেহিঁচড়ে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে হত্যা করে ফেলে রাখা হয় ভূতুড়ে অন্ধকারে।

পরদিন সকালে ঢাকার মিরপুরের ডোবা-নালা ও রায়েরবাজার ইটখোলায় বিক্ষিপ্তভাবে পড়ে থাকতে দেখা যায় হতভাগ্য এসব বুদ্ধিজীবীর নিথর দেহ। এ যেন বাঙালির সংস্কৃতি ও সভ্যতার এক নির্মম বধ্যভূমি। কারও শরীর বুলেটবিদ্ধ, কারও দেহ অমানুষিক নির্যাতনে ক্ষত-বিক্ষত। হাত পেছনে বেঁধে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে অনেকের নাড়ি-ভুঁড়িও বের করে ফেলা হয়েছিল। আর ঘুম থেকে জেগে ওঠা স্বাধীনতা ছুঁই ছুঁই উল্লসিত মানুষ স্বজন হারানোর সেই কালরাত্রির কথা জানতে পেরে শিউরে উঠেছিল। স্থবির হয়ে গিয়েছিল সবকিছু। মুখ থুবড়ে পড়েছিল স্বাধীনপ্রায় শিশুরাষ্ট্র বাংলাদেশ।১৪ ডিসেম্বরকে বুদ্ধিজীবীদের নিধনযজ্ঞের শিকারের দিন হিসেবে স্মরণ করা হলেও মূলত একাত্তরের ১০ ডিসেম্বর থেকেই ইতিহাসের এ ঘৃন্যতম অপকর্মের সূচনা হয়। সপ্তাহজুড়ে এদের তালিকায় একে একে উঠে আসে অসংখ্য বুদ্ধিদীপ্ত সাহসী মানুষের নাম। পরে এসব বুদ্ধিজীবীর তালিকাই তুলে দেওয়া হয়েছিল তৎকালীন জামায়াতে ইসলামীর সশস্ত্র ক্যাডার গ্রুপ কুখ্যাত আলবদর ও আলশামস বাহিনীর হাতে। নেপথ্যে ছিলেন পূর্ব পাকিস্তানের তৎকালীন গভর্নরের সামরিক উপদেষ্টা রাও ফরমান আলি। পরে ১০ ডিসেম্বর থেকে রাতের আঁধারে তালিকাভুক্ত বুদ্ধিজীবীদের বাসা থেকে চোখ বেঁধে রায়েরবাজার ও মিরপুর বধ্যভূমিতে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা শুরু হয়। আর এ অপকর্মের চূড়ান্ত নীলনকশারই বাস্তবায়ন ঘটে ১৪ ডিসেম্বর।শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাণী দিয়েছেন। আলাদা বাণীতে শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনের পাশাপাশি তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করেছেন তাঁরা।