NEWSTV24
২৭ বছরেও বাসযোগ্য হলো না পূর্বাচল
শনিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২২ ১৬:০১ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

বিস্তীর্ণ এলাকার কোথাও ধানক্ষেত, কোথাও ফাঁকা মাঠ। আবার কিছু জায়গা ভরে গেছে বনবাদাড়ে। তারই ফাঁকে ফাঁকে মাথাচাড়া দিচ্ছে দু-একটি ভবন। দিনেই নির্জন; সন্ধ্যা নামতেই ঘুটঘুটে অন্ধকার, গা ছমছম পরিবেশ। এ চিত্র রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) পূর্বাচল উপশহর প্রকল্প এলাকার। ১৯৯৫ সালে জনবসতি গড়ে তোলার জন্য নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ ও গাজীপুরের কালীগঞ্জ থানার ৬ হাজার ১৫০ একর জমিতে প্রকল্প শুরু করে রাজউক। কিন্তু দীর্ঘ ২৭ বছরেও সেখানে নূ্যনতম নাগরিক সুবিধার পরিবেশ গড়ে ওঠেনি। ফলে অনেকেই প্লট বিক্রি করে দিচ্ছেন।
পূর্বাচল প্রকল্পের প্রধান প্রকৌশলী উজ্জ্বল মল্লিক জানান, এখন সেখানে গেলে তাঁরও ভয় করে। মনে হয়, ওখানে কাউকে নিয়ে হত্যা করে ফেললেও কেউ জানবে না। তিনি বলেন, অনেক কিছুই করলাম। কিন্তু এমন একটি কাজ বাকি, যা না হলে মানুষের পক্ষে বসবাস করা সম্ভব নয়। এ জন্য কত শতাংশ অগ্রগতি, তা বলে লাভ নেই।

পূর্বাচল এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা আব্দুর রউফ জানান, তিনি বাড়ি বানালেও আশপাশে ধানক্ষেত ও বনজঙ্গলে ভরা। পাশেই আবার নদী। রাতে ভয়ে ভয়েই থাকছেন বলে জানান তিনি। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা জানান, সন্ধ্যার পরই তাঁর বাড়িতে প্রধান সড়ক থেকে যাওয়ার কোনো যানবাহন থাকে না। নেই কোনো সড়কবাতি। এ জন্য সন্ধ্যার মধ্যে ফিরতে হয় বাড়িতে। ৩০০ ফুট ছাড়া কোথাও কিছু পাওয়া যায় না। এভাবে বসবাস করা নিয়ে প্রশ্ন রাখেন তিনি।সরকারি চাকরিজীবী কোটায় ৪ নম্বর সেক্টরের ৩১১বি নম্বর সড়কে তিন কাঠা প্লটের মালিক ঢাকা ওয়াসার অবসরপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা জানান, রেজিস্ট্রি-নামজারি শেষে প্লটটিতে বেশ কয়েক বছর দেয়াল দিয়ে রেখেছেন তিনি। এক সময় সেখানে বাড়ি করে বসবাসের চিন্তা থাকলেও এখন সরে এসেছেন। প্লটটি বিক্রির জন্য ক্রেতা খুঁজছেন তিনি। স্কুল-কলেজ-হাসপাতাল, বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাসসহ প্রয়োজনীয় নাগরিক সুবিধা না থাকায় প্লটটি বিক্রি করে ঢাকা শহরে একটি ফ্ল্যাট কেনার চিন্তা করছেন।

রাজউকের এক কর্মকর্তা বলেন, রাজউক প্লট বরাদ্দ এখনও শেষ করতে পারেনি। কমার্শিয়াল প্লটগুলো এখনও বরাদ্দ দিতে পারেনি। এখন দেশে ডলার সংকট চলছে। সামনে সংকটের পদধ্বনির কথা শোনা যাচ্ছে। তাহলে প্রকল্পের কাজ কীভাবে এগোবে? সরেজমিন দেখা যায়, বেশিরভাগ প্লটই খালি। দু-চারজন স্থানীয় বাসিন্দা অস্থায়ীভাবে একতলা-দোতলা বা টিনশেড ঘর বানিয়ে বসবাস করছেন। নকশা অনুযায়ী অবকাঠামো হচ্ছে হাতেগোনা গোটাবিশেক। কিছু প্লটে সীমানাপ্রাচীর দেওয়া। কিছু প্লটে চলছে সবজি চাষ। কোনোটাতে কিছুই নেই। এমন অবস্থায় কোনো ডেভেলপার কোম্পানি পূর্বাচলের প্লটে কাজ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছে না। ফলে থমকে আছে পূর্বাচলে জনবসতি গড়ে ওঠার কার্যক্রম।