NEWSTV24
বাড়ছে নিরাপত্তা হুমকি
বৃহস্পতিবার, ২৫ আগস্ট ২০২২ ১৬:৫১ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

রাখাইন রাজ্যে ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের ওপর নজিরবিহীন বর্বরতা চালায় মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। এর পর ওই বছরের ২৫ আগস্ট থেকে দলে দলে রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে ঢোকে। এ ঘটনার পর ৭ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারে ঠাঁই নেয়। এর আগেও কয়েক দশকে অন্তত ৩ লাখ রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল। এ ছাড়া প্রতি বছর ক্যাম্পে ৩০ হাজার রোহিঙ্গা শিশুর জন্ম হচ্ছে। সব মিলিয়ে ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে নিয়ে এখন আর্থসামাজিক চাপে বাংলাদেশ। এই রোহিঙ্গাদের ঘিরে নিরাপত্তা ঝুঁকিও বাড়ছে। মাদক, অস্ত্র, চোরাচালান, খুনোখুনিতেও জড়াচ্ছে রোহিঙ্গাদের একটি গ্রুপ। কক্সবাজার জেলা পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, গত ৫ বছরে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নানা অপরাধের ঘটনায় মামলা হয়েছে ২ হাজার ৩৬৩টি। গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৪ হাজার ৯৭৯ জনকে।আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস (এআরএসপিএইচ) নেতা মো. জোবায়ের ২৫ আগস্টকে রোহিঙ্গাদের জন্য কালো দিন আখ্যা দিয়েছেন। তিনি দিবসটি পালনের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের প্রস্তুতির কথাও জানান।উখিয়ার একাধিক রোহিঙ্গার সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মিয়ানমারভিত্তিক সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) নাম ভাঙিয়ে একটি গ্রুপ সাধারণ রোহিঙ্গাদের মধ্যে প্রত্যাবাসনবিরোধী মনোভাব উস্কে দিচ্ছে।খুনোখুনিসহ ক্যাম্পের বিভিন্ন অপরাধের পেছনে তারাই মূল ভূমিকা পালন করছে।

সর্বশেষ ৯ আগস্ট উখিয়ার জামতলী রোহিঙ্গা ক্যাম্পে জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে। ক্যাম্প ১৫-এর ব্লক সি/১-এর আব্দুর রহিমের ছেলে প্রধান মাঝি আবু তালেব ও একই ক্যাম্পের সি/৯-এর ইমাম হোসেনের ছেলে সাব ব্লক মাঝি সৈয়দ হোসেনকে খুন করা হয়। এর তিন দিন পর একই ক্যাম্পে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাতে মহড়া দেয় একটি গ্রুপ।কক্সবাজারের উখিয়ার জামতলীর ১৫ ক্যাম্পের রোহিঙ্গা মাঝি আবদুল বাছের। স্ত্রী ও পাঁচ সন্তান মিলে বাছেরের সংসার। মিয়ানমারে সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পাঁচ বছর আগে মংডুর বুছিডং এলাকা থেকে পরিবারের ৫ সদস্য নিয়ে কক্সবাজারে আশ্রয় নিয়েছিলেন। এর পর ক্যাম্পে তাঁর ঘরে আসে দুই নতুন অতিথি। গতকাল বুধবার বাছের  বলেন, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিজ মাটিতে ফিরতে চাই। বিপদের সময় বাংলাদেশ আমাদের আশ্রয় দিয়েছে। এ জন্য কৃতজ্ঞ। আমরা এখানে বছরের পর বছর থাকতে আসিনি। বাপ-দাদার মাটিতে কে না ফিরতে চায়!তিনি বলেন, একটি গ্রুপ আছে; আরসা পরিচয় দিয়ে ক্যাম্পে আতঙ্ক তৈরির চেষ্টা করছে। তারা মাঝি ও সাব মাঝিদের শত্রু মনে করছে। অপরাধী ওই চক্রের ধারণা, ক্যাম্পের দুষ্টু লোকদের সব তথ্য প্রশাসনকে মাঝিরা জানিয়ে দিচ্ছেন। এ কারণে তাদের বাণিজ্যের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নারী দেখলেই কিছু লোক তাদের বিরক্ত করে। জোর করে সম্পর্ক করতে চায়। ক্যাম্পের ভেতরে কোনো ঝামেলা তৈরি হলে তারা টাকার বিনিময়ে বিচার-সালিশ করতে আগ্রহী। অনেক সময় রাতে ক্যাম্পে তারা মহড়া দেওয়ার চেষ্টা করে। সাধারণ রোহিঙ্গা দলবদ্ধ হয়ে ছোট ছোট গ্রুপে নিজের এলাকা নিজেরা রাতে পাহারা দিচ্ছে।