আগামী ২৫ জুন চালু হবে পদ্মা সেতু। এ সেতু চালু হলে যাত্রাবাড়ী থেকে মাওয়া পর্যন্ত সড়কে চাপ বাড়বে যানবাহনের। এই চাপ সামাল দিতে বসানো হবে ইনটেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্ট সিস্টেম (আইটিএস)। এর মাধ্যমে সড়কের কোথাও যানজট হলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারবে হাইওয়ে পুলিশ বা ট্রাফিক বিভাগ। সড়কজুড়ে থাকবে বিশেষ ক্যামেরা। এর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ (কন্ট্রোল রুম) থাকবে সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের (সওজ) সদর দপ্তরে। সেখান থেকেই পর্যবেক্ষণ করা হবে সংশ্লিষ্ট এলাকার যানবাহনের গতিবিধি।এ বিষয়ে সওজের প্রধান প্রকৌশলী একেএম মনির হোসেন পাঠান বলেন, সওজ দপ্তরে ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার স্থাপন করা হবে। প্রাথমিক অবস্থায় মাওয়া মহাসড়কের অংশে আইটিএস ব্যবস্থা থাকবে। সড়কে ক্যামেরা থাকবে। ফলে ওই এলাকার যানজট কমাতে ভূমিকা রাখা সম্ভব হবে।জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে মাওয়া পর্যন্ত আইটিএস স্থাপনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে পদ্মার আরেক পার অর্থাৎ জাজিরা হয়ে গোটা মহাসড়ক এ সুবিধা পাবে। এই আইটিএস হচ্ছে- সড়ক অবকাঠামোর সঙ্গে আধুনিক প্রযুক্তির একটি সমন্বিত ব্যবস্থা। এটি সড়কের নিরাপত্তা, দক্ষতা ও ক্ষমতাকে নিশ্চিত করবে। এর ফলে কোথাও দুর্ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক গাড়ি অপসারণসহ যানজট দূর করা যাবে। সড়কের কোথাও মানুষ কিংবা প্রাণীর মৃত্যু হলে সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারবে পুলিশ। কোনো সড়কে গাড়ির সংখ্যা বেড়ে গেলে বিকল্প পথ দেখানোর ক্ষেত্রে সহায়তা করবে আইটিএস। আবহাওয়ার বিষয়টি আঁচ করেও ট্রাফিক বিভাগকে অবগত করার জন্য কাজ করতে পারবে এ অত্যাধুনিক ব্যবস্থা। মোট কথা যানবাহনের পরিমাণ, গতি, দুর্ঘটনা ইত্যাদি তাৎক্ষণিক মনিটরিংয়ে কার্যকর পদ্ধতি হচ্ছে আইটিএস।
এ জন্য ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট সেন্টার স্থাপনে পরামর্শক নিয়োগ করছে সওজ। কোরিয়া সরকারের কোইকার সহায়তায় সড়কে বিশেষ ডাটা সংযোগের মাধ্যমে ক্যামেরা বসানো হবে। থাকবে বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থাও। ইতোমধ্যে কোইকার সহায়তায় ইমপ্রুভমেন্ট দ্য রিলাইবলিটি অ্যান্ড সেফটি অন ন্যাশনাল হাইওয়ে করিডরস অব বাংলাদেশ বা ইনট্রোডাকশন অব আইটিএস প্রকল্প বাস্তবায়নে ঢাকা-মাওয়া জাতীয় মহাসড়ক বেছে নেওয়া হয়েছে। যাত্রাবাড়ী ইন্টারসেকশন থেকে মাওয়া পর্যন্ত আধুনিক ট্রাফিক অপারেশন ম্যানেজমেন্ট প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে। এটি হচ্ছে নির্দিষ্ট দূরত্বে সার্ভিল্যান্স ক্যামেরা স্থাপনের কাজ। ইতোমধ্যে সংশ্লিষ্টদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এখন এটি পদ্মার ওই পারে বিস্তৃত করা যায় কীভাবে, সেসব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পদ্মা সেতুর অবকাঠামোগত ব্যবস্থা কী, সে অনুযায়ী পদক্ষেপ নিচ্ছে সওজ। এ জন্য ইতোমধ্যে বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি। মূলত ভূগর্ভস্থ অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে আইটিএস সংযোগ দেওয়া হবে।সওজ বলছে, সড়কের নিরাপত্তা রক্ষায় এই যন্ত্র কাজে দেবে। অনেক সময় সড়কের অবকাঠামোগত যন্ত্রপাতি খোয়া যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোথাও কোনো সমস্যা হলে তা দেখে সে অনুযায়ী দ্রুত ব্যবস্থা নিতে এ যন্ত্রের জুড়ি নেই।সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে বলা হয়েছে, হাইওয়ে কিংবা এক্সপ্রেসওয়েতে প্রায় সময় কুকুর, বিড়াল কিংবা অন্য প্রাণী দুর্ঘটনাজনিত কারণে মরে থাকতে দেখা যায়। কিন্তু অপসারণের কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। এটি একদিক থেকে অমানবিক, পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর ও দুর্ঘটনারও কারণ।