NEWSTV24
কর্মসংস্থানের অভাব অপরাধ বাড়াচ্ছে
শনিবার, ০৯ এপ্রিল ২০২২ ১৫:৩২ অপরাহ্ন
NEWSTV24

NEWSTV24

করোনার দুঃসময়ে চাকরি হারান মাসুদ মিয়া। বেকার হয়ে পড়া মাসুদ নেত্রকোনার দুর্গাপুরে বাড়ির পাশের হেকমত আলীর দোকান থেকে বাকিতে নিত্যপণ্য কিনতেন। দেনা পরিশোধের চাপ বাড়তে থাকে মাসুদ মিয়ার ওপর। টাকাও দিতে পারছিলেন না। আবার নতুন চাকরিও হচ্ছিল না। দেনা পরিশোধের দায় থেকে মুক্তি পেতে এবং টাকা লুট করতে গত ২০ মার্চ রাতে দোকানি হেকমত আলীকেই খুন করেন মাসুদ।বেকারত্ব কিংবা কোভিড মহামারী শুধু মাসুদকে খুনি করে তোলেনি, কর্মসংস্থান কমে যাওয়ায় অনেক মানুষকে অপরাধমূলক কর্মকা;ের দিকে নিয়ে গেছে। পুলিশের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৬ মাসে রাজধানীতে খুন হয়েছে ৮২ জন। গত চার মাসে রাজধানীতে বেড়েছে চুরি, ছিনতাই ও ডাকাতিসহ অপরাধমূলক কর্মকা। জানুয়ারিতে ১১২টি চুরির ঘটনা ঘটলেও ফেব্রয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১৩৫টিতে। অন্যদিকে ছিনতাই-চাঁদাবাজির মতো মামলা জানুয়ারিতে ৩৪টি হলেও ফেব্রয়ারিতে তা বেড়ে দাঁড়ায় ৪৬টিতে। জানুয়ারিতে দস্যুতার ঘটনা ১০টি থাকলেও ফেব্রয়ারিতে তা বেড়ে হয় ১৬টি।তবে সংশ্লিষ্টরা বলছে, মামলার সংখ্যার চেয়ে প্রকৃত চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা কয়েকগুণ। ভুক্তভোগীরা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই মালামাল ফেরত না পাওয়ায় থানায় অভিযোগ করেন না।অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, মহামারীতে মানুষের আয় কমেছে, কেউ চাকরি হারিয়েছেন, কারও ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।

করোনাকালীন সময়ে কর্মসংস্থান কমে যাওয়া এবং ঘরবন্দি জীবন অস্থিরতা বাড়িয়েছে। চাকরি হারিয়ে কিংবা নিজের পেশায় আয় কমে যাওয়ায় টিকে থাকতে কেউ আবার অপরাধীও হয়ে উঠছে। প্রতারণার মাধ্যমেও কেউ কেউ অর্থ উপার্জনের চেষ্টা চালাচ্ছে। ভাড়াটে খুনি হিসেবে কাজ করার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। চুরি-ডাকাতির পাশাপাশি ঠুনকো বিষয়ে খুনোখুনির মতো ঘটনাও ঘটছে।ডিএমপি কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, রাজধানীতে পাঁচ শতাধিক সক্রিয় ছিনতাইকারীর তালিকা পুলিশের কাছে রয়েছে। অর্থনৈতিক কর্মকা সীমিত হয়ে যাওয়ার কারণে তারা আগ্রাসী হয়ে গেছে। সন্তানকে মা কিংবা মাকে সন্তান জবাই করে ফেলছে মাদকের টাকার জন্য। এ ধরনের অপরাধী রাস্তায় মানুষকে চাকু মেরে ছিনতাই করতে দ্বিধা করে না।আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) ওয়ার্ল্ড এমপ্লয়মেন্ট অ্যান্ড সোশ্যাল আউটলুক- ট্রেন্ডস ২০২২ শীর্ষক প্রতিবেদন বলছে, করোনায় বাংলাদেশে নতুন করে বেকার হবে ৩৬ লাখ মানুষ। আইএলও বলছে, আগামী ২০২৩ সাল পর্যন্ত কাজের বাজারে করোনার প্রভাব থাকবে। এর মধ্যে নতুন কাজ হারানোর সংখ্যা আরো বাড়বে। কমবে নতুন কর্মসংস্থানের হার।